নগরসেবায় ক্যারাভান কার্যক্রম শুরু:মাঠে থেকে তা স্পটে সমাধান করা হবে-সুজন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, নগরবাসীর দূর্ভোগ লাঘবে আমি তাৎক্ষণিক এ্যাকশনে নেমেছি। যেসকল স্থায়ী সমস্যাগুলো আছে তার একটি স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা অনুসন্ধান আমি করে যাচ্ছি। পরবর্তীতে যারা মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করবেন তারা যাতে এই নির্দেশনানুযায়ী স্থায়ী সমাধান দিতে পারেন সেজন্য নগরবাসীর পরামর্শ এবং তাদের আবেদন নিবেদন আমি জ্ঞাত হতে চাই। এজন্য যেকেউ যেকোন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন এবং এজন্য আমি মুখিয়ে আছি।

তিনি আজ দুপুরে নগরীর বহদ্দারহাটে আরাকান সড়কে তাঁর ঘোষিত নগরসেবায় ক্যারাভান কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুকালে একথাগুলো বলেছেন।

তিনি আরো বলেন, জনদূর্ভোগের যে কারণগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তা চিহ্নিত করে সুরাহা করাটা আমার কর্তব্য। সুরাহা করতে গিয়ে যে প্রতিবন্ধকতাগুলোর সম্মুখিন হবো তা অবশ্যই অতিক্রম করে যাবো। আমার এই উদ্দেশ্য পূরণে চসিকের সকল বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। এই নির্দেশনানুযায়ী অর্পিত দায়িত্ব পালনে কেউ ব্যর্থ হলে তাকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি নগরসেবায় ক্যারাভান কার্যবিধি সম্পর্কে বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর সড়ক ও জনপথ, ড্রেইন, ফুটপাতে যে সমস্যা বিরাজমান তা মিটিং কিংবা কমিটি গঠন করে সময়ক্ষেপন না করে সরেজমিনে মাঠে থেকে তা স্পটে সমাধান করা হবে। ক্যারাভান কার্যক্রমের অধিনে চলতি পথে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক,নষ্ট সড়কবাতি,পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমসহ যে সকল সমস্যার কারণে নাগরিক দূর্ভোগ সৃষ্টি হয় তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করছি।

এসময় প্রশাসক পথচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাস্ক তুলে দিয়ে বলেন, আজ এর প্রথমদিন। পরবর্তীতে সপ্তাহে অন্তত একদিন এই প্রোগ্রাম নিয়ে অন্যান্য নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে যাব। প্রধান সড়কে সম্পন্ন হলে নগরের অলিগলিতে যাব। মূলত এই কর্মসূচির মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে নাগরিক সমস্যার সমাধান ও জনসম্পৃক্ততার চেষ্টা করব। শুনবো তাদের অভিযোগ ও পরামর্শ।

এসময় সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন প্রশাসক। তিনি তাদের অভাব-অভিযোগগুলো শুনে তা সমাধানের দিক নির্দেশনা দেন। যা পেয়ে এলাকাবাসী সন্তুষ্টি চিত্তে অভিভাদন জানান।

এসময় সাবেক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন সাইফু, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ সফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সালেহ, নির্বাহী প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী, রাজনীতিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ নিজু, মোরশেদ আলম, নোমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

নগরীর হকারদের সাঝে চসিক প্রশাসকের বৈঠক হকার উচ্ছেদ নয়,চাই শৃংখলার
মধ্যে ব্যবসা পরিচালনা-সুজন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, বাংলাদেশে নগরের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু এই বর্ধিষ্ণু জনগণের সবার পক্ষে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হওয়া সম্ভবপর হয় না। শহরে আসা নতুন জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই শহরের বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো দ্বারা অবশোষিত হতে ব্যর্থ হয়। ফলে এই জনস্রোত নগরীর ব্যাপক বিস্তৃত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অপ্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রসমূহে নিয়োজিত হয়ে পড়ে। এভাবে বাংলাদেশের নগর কেন্দ্রসমূহের জনগণের একটি বিরাট অংশ রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে পণ্য ফেরি করার মতো অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিজেদের নিয়োজিত রয়েছে। মানবিক দিক বিবেচনায় এসব জনগোষ্টিকে আমরা চাইলেই উচ্ছেদ করতে পারছি না। তাদের সাথে জড়িত রয়েছে তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য। কিন্তু বর্তমানে নগরীতে রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে হকারদের বে-পরোয়া আচরণে জনদূর্ভোগ বেড়েছে। ফুটপাত সংকুচিত করে পথচারী চলাচলের জায়গাটুকু হারাতে বসেছে। আমরা চাই পথচারীরাও স্বাচ্ছন্দে চলুক হকাররাও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবসা পরিচালা করুক। হকার উচ্ছেদ নয়-চাই শৃংখলার মধ্যে ব্যবসা পরিচালনা করুক। তাই নগরবাসী রাস্তায় ও ফুটপাতে স্বাচ্ছন্দে চলাচলের জন্য হকারদের মধ্যে শৃঙ্খলা আনায়ন অতীব জরুরি।

এলক্ষ্যে আজ সকালে চট্টগ্রামে ব্যবসারত হকার ও হকারনেতাদের সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনের সাথে আন্দরকিল্লাস্থ চসিক পুরাতন নগরভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে হলে অনুষ্ঠিত হকার্স নেতৃবৃন্দের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তমতে ননগরীর ফুটপাতে ব্যবসারত হকারদের কে কোন স্পটে বসবে তা নির্ধারণ করবেন হকার নেতৃবৃন্দ। এক্ষেত্রে নগরীর বিভিন্ন স্থানে হকাদের বসার স্থান সাইজসহ মার্কিং করে দেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। বিকেল ৩টা হতে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হকাররা নগরীর ফুটপাতে বসবেন এবং ফুটপাতের একটি অংশ জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। তালিকাভুক্ত হকারদের নির্দ্দিষ্ট ব্যাচ ও ইউনিফরম থাকবে। এছাড়া ফুটপাত বা রাস্তায় হকারদের কোন অবকাঠামো থাকতে পারবে না। নির্দ্দিষ্ট সময় ব্যবসা করার পর চসিক’র পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা- আর্বজনা অপসারণে দায়িত্ব পালন করবে। অবশ্যই রাস্তার উভয়পাশে ব্যবসা না করে একপাশে বসতে হবে।

উল্লেখিত সিদ্ধান্ত সমূহ আগামী ৪ সেপ্টেম্বর হতে কার্যকর হবে।

বৈঠকে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুফিদুল আলম, স্পেশাল ম্যাজিস্টেট(যুুগ্ম জেলা জজ)জাহানারা ফেরদৌস, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা আকতার নেলী, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, সম্মিলিত হকার্স ফেডারশনের সভাপতি মিরন হোসেন মিলন, ফুটপাত হকার্স সমিতি সভাপতি নুরুল আলম লেদু, মহানগর মহানগর হকার্স লীগ সভাপতি প্রবীর কুমার ঘোষ, সাবেক সভাপতি ঋষি বিশ্বাস, সিটি হকার্স সমিতির আজগর আলী, টেরি বাজার আন্দরকিল্লা হকার্স সমিতির লোকমান হাকিম, মেট্টোপলিটন হকার্স লীগের জসিম মিয়া, হারুন উর রশিদ, ফুটপাত হকার্সলীগের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, নুরুল আমীন মিয়া, পতেঙ্গা হকার্সলীগের মাহমুদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এই বৈঠকের মাধ্যমে চসিক ও হকারদের মধ্যে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে। এর ব্যত্যয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে প্রশাসক হুশিয়ার করে দেন।

চসিকের ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী ও স্পেশাল ম্যজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) জাহানারা ফেরদৌস এর নেতৃত্বে আজ অপরাহ্নে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। অভিযানকালে নগরীর কাজির দেউরী মোড় হইতে বিমান অফিস পর্যন্ত নুর আহমদ সড়কের উপর অবৈধভাবে পার্কিং করে রাখা ট্রাক উচ্ছেদ করা হয়।

এই সময় অবৈধভাবে ট্রাক পার্কিং করার অপরাধে ২টি ট্রাক ড্রাইভারকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানকালে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয়কে সহায়তা প্রদান করেন।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *