সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে আসা তথ্য চিত্রের আলোকে সড়কে প্যাচওয়ার্ক কার্যক্রম চলছে-সুজন

নগরের সড়ক মেরামতে চসিকের নয়টি ডিভিশনের মাধ্যমে চসিকের টীম গঠন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবগত হয়ে প্যাচওয়ার্ক কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন চসিক প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন।

আজ বৃহষ্পতিবার সংবাদ মাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ তথ্য জানান। আজ প্রদত্ত এক বার্তায় প্রশাসক জানান যে, ভারি বর্ষণ ও জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত চট্টগ্রামের অধিকাংশ সড়ক বেহাল অবস্থা। নগরীর বেশির ভাগ সড়কই ভরে গেছে খানাখন্দে। অনেক এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। চলাচল ও হাঁটা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থায় আছে নগরের অভ্যন্তরীণ সড়ক-উপসড়কগুলো। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক যান চলাচল। নাগরিক দূর্ভোগ চরমে উঠেছে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা মোকাবেলা চট্টগ্রামবাসীর নিয়তি। এর মধ্যে রাস্তায় খানাখন্দ দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ১৫০ কিলোমিটারের বেশি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নগরীর বেশির ভাগ প্রধান সড়কের পিচ, ইট, সুরকি উঠে গেছে। নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং, বন্দর কাস্টমস ও জাকির হোসেন রোড, দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, হালিশহর, চকবাজার,কোতোয়ালি-ফিরিঙ্গি বাজার, আন্দরকিল্লা, অক্সিজেন, বিমানবন্দর সড়ক ও কাপ্তাই রাস্তার মাথাসহ বেশির ভাগ প্রধান সড়কই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইতোমধ্যে জনদূর্ভোগ লাঘবে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনের নির্দেশে ভারি বর্ষণ ও জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত প্রধান সড়কগুলো অস্থায়ীভাবে মেরামতের কাজ শুরু করেছে। চসিকের ৯টি বিভাগের আওতায় বিভিন্ন এলাকায় প্যাচওয়ার্কের মাধ্যমে সংস্কার কাজও চলমান। এছাড়া প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের আহবানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন এলাকার সচেতন মহল নিজ দায়িত্বে ছবি ও তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবগত করছেন। সেই অনুসারে প্রশাসকের গঠিত টীম দ্বারা তরিৎ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নিয়মিত মেরামতের অংশ হিসেবে অস্থায়ীভাবে এসব সড়কে মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। ফকিরহাট, কালা মিয়া বাজার, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, এফআইডিসি রোড, সল্টগোলা ক্রসিং, বন্দর কাস্টমস ও জাকির হোসেন রোডে সংস্কার কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোতে স্থায়ীভাবে সংস্কারকাজ পরবর্তী স্থায়ীভাবে রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। চসিকের চলমান প্যাচওয়ার্ক কাজ তরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতার জন্য চসিক প্রশাসক নগরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

চসিক পূজা উদযাপন পরিষদের প্রস্তুতি সভায় প্রশাসক
পুণ্য করতে গিয়ে নিজেকে বিসর্জন করা যাবে না
সনাতন সম্প্রদায়ের আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব ধর্মীয় গাম্ভীযের সাথে উদ্যাপনের জন্য চসিক পূজা উদযাপন পরিষদকে সার্বিক সহযোগীর আশ্বাস দিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীকালে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় পবিত্র হজ্ব পালন, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহাসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানও সীমিত করা হয়েছে। তাই সরকারি নির্দেশিত স্বাস্থ্য বিধি বিধান মেনে পূজা উদযাপন করতে হবে। পুণ্য করতে গিয়ে নিজেকে বিসর্জন করা যাবে না।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্দরকিল্লাস্থ চসিক পুরাতন নগরভবনের কেবি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিক পূর্জা উদ্যাপন পরিষদ আয়োজিত শারদীয় দুর্গোৎসব ১৪২৭ বঙ্গাব্দ উদ্যাপন উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পূজা উদ্যাপন পরিষদের নব নির্বাচিত সভাপতি প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, উপ সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু, চসিক পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ দে, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার চৌধুরী বক্তব্যে রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিক পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রতন চৌধুরী।

এই প্রস্তুতি সভায় চসিক পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক অর্থ সম্পাদক রুপন কান্তি দাশ ১৪২৭ বঙ্গাব্দের বাজেট বক্তব্য পেশ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রশাসক আরো বলেন বাঙালী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। এই উৎসব আয়োজনে চসিকের ব্যাপকতা অনেক বেশি। তিনি চসিকের পূজা উদ্যাপন পরিষদের উদ্যোগে পূজার তহবিল থেকে কর্পোরেশনের কর্মরত অস্বচ্ছল কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ও পরিবারদের মাঝে আর্থিক সাহায্য, অনাথ আশ্রমে অনুদান, বস্ত্র বিতরণ প্রভৃতি মানবতা ও সেবাধর্মী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সাম্প্রতিক বৈশ্বিক মহামারী করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রশাসক বলেন, করোনায় আতংকিত না হয়ে সচেতন হোন। সরকারী স্বাস্থ্যবিধি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নির্দেশনা অনুসরণ করে এই মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এব্যাপারে সকলকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান প্রশাসক। অন্যান্য বছরের ন্যায় এই বছরও চসিকের পূজা উদ্যাপন পরিষদ ষষ্ঠীর দিনে গরীব দুঃস্থদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদানে চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করবে। এই বারের ১৪২৭-১৪২৮ বঙ্গাব্দের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রকৌশলী ঝুলন কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক রতন চৌধুরী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন হারাধন আচার্য্য, কানু লাল নাথ, সমীর কর, সরোজ গুহ, কল্লোল দাশ (বাপ্পী), রতন দত্ত, উৎপল সেন পিংকু, তবলু দাশ, প্রভাষ দাশ, অজয় দাশ, দিলীপ দাশ,লিটন দাশ ইপ্তি সহ অন্যরা । অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যক্ষ কঙ্কন দাশ।

সিটি কর্পোরেশন প্রশাসক সুজনের সাথে চ.বি সমাজতত্ত্বের প্রাক্তনীদের সৌজন্য স্বাক্ষাৎ ও মত বিনিময় সভা
বিত্তের শহর নয়,চট্টগ্রামকে চিত্তের শহর
হিসাবে আগামী প্রজন্মকে উপহার দিতে চাই-সুজন

গতকাল সন্ধ্যায় প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্র সমিতি,সমাজতত্ত্ব বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন এর নেতৃত্বে কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর নবনযিুক্ত প্রশাসক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনের বাসভবনে সৌজন্য স্বাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভায় মিলিত হোন।

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী ও বিভাগের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর ড. ওবায়দুল করিম দুলাল, সমিতির সাবেক সভাপতি সিরাজুল হক আনসারী, রাশেদ মনোয়ার, সেক্রেটারী আবুল কালাম আজাদ, এডভোকেট মুজিবুল হক, এস এম মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মো: জহিরুল আলম, মো: নওশাদ চৌধুরী মিটু, সৈয়দা মাসুদা তুরানী, সাইফুদ্দীন সাকী, আরশাদ উল্লাহ, সেলিম খান প্রমুখ।

এসময় সমিতির নেতৃবৃন্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, খোরশেদ আলম সুজনের মতো একজন সজ্জ্বন,সৎ, ন্যায়নিষ্ঠ ও সত্য প্রকাশে নির্ভীক ব্যক্তিত্বকে ছয় মাসের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর প্রশাসক নিযুক্ত করায়। মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে আমরা শোকরানা আদায় করছি।

সমিতির নেতৃবৃন্দকে প্রশাসক সুজন বলেন, বিত্তের শহর নয়,“চট্টগ্রামকে চিত্তের শহর হিসাবে আগামী প্রজন্মকে উপহার দিতে চাই”। আমাকে ফুল উপহার না দিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কি কি পদক্ষেপ নেয়া যায় সে বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ প্রদান করুন। যে কাজ করে সে তার ভুল দেখতে পায় না,দয়া করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অলোকিত সতীর্থ হিসাবে আমাকে ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন,এতেই আমি কৃতার্থ আর আনন্দিত হবো।

তিনি আরো বলেন,’চট্টগ্রাম সিটির অবকাঠামোগত উন্নয়নে আমার দৃষ্টি থাকবে সম্মুখে,কোন অপশক্তি এই কাজে বাধা হতে পারবে না,সকলের উপদেশ ও সহযোগীতা প্রত্যাশা করছি।

মাতৃসদন কাম জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় মন্ত্রী জাহিদ মালেক, এম.পি ও স্বাস্থ্য সচিব
বরাবরে প্রশাসকের পত্র প্রেরণ

চট্টগ্রাম ইপিজেড ও সন্নিহিত এলাকার বিশাল সংখ্যক কর্মজীবী মানুষের চিকিৎসার নিমিত্ত মাতৃসদন কাম জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক এম পি ও স্বাস্থ্য সচিব বরাবরে পত্র প্রেরণ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন।

প্রেরিত পত্রে প্রশাসক মাননীয় মন্ত্রী’র দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক উল্লেখ করেন যে, আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থেকে শুরু করে পতেঙ্গা পর্যন্ত ও এর সন্নিহিত এলাকায় ইপিজেড, গার্মেন্টস, অসংখ্য শিল্প-কারখানা ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে থাকেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশ হচ্ছেন নারী শ্রমিক। নারী শ্রমিকদের মধ্যে বছরে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লক্ষ মহিলা গর্ভবতী হয়ে থাকেন। গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তান প্রসব পর্যন্ত এই শ্রমজীবী নারীদের সুচিকিৎসার জন্য উক্ত এলাকায় কোন মাতৃসদন হাসপাতাল নেই। তাছাড়া লক্ষ লক্ষ শ্রমিকদের যে কোন সাধারণ চিকিৎসার জন্যও উক্ত এলাকায় কোন জেনারেল হাসপাতাল নেই। সর্বোপরি বন্দর থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ও এর সন্নিহিত এলাকা ব্যস্ততম এলাকা হওয়ায় এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। যার ফলে গর্ভবতী নারী শ্রমিকসহ শ্রমিকদের প্রায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরবর্তী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিংবা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা অনেক সময় সাপেক্ষ এবং এতে তারা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এতদ্প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম ইপিজেড ও সন্নিহিত এলাকার বিশাল সংখ্যক কর্মজীবী মানুষের সুচিকিৎসার জন্য উক্ত এলাকায় ১টি মাতৃসদন কাম জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা অতীব প্রয়োজন।

বর্ণিত প্রেক্ষাপটে, চট্টগ্রাম ইপিজেড ও সন্নিহিত এলাকার বিশাল সংখ্যক কর্মজীবী মানুষের চিকিৎসার নিমিত্ত ১টি মাতৃসদন কাম জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ একান্তভাবে কামনা করছি। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *