ঠাকুরগাঁওয়ে ছাগল পালন করে সফল প্রভাষক শামীম

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে দেড় বছর আগে শখের বসে বিশ ’টি ছাগল পালন শুরু করেছিলেন প্রভাষক শামীম আহমেদ। এখন তার খামারে ছাগলের সংখ্যা ১৫০ টি যার বাজার মূল্য প্রায় দের কোটি টাকার ও বেশি।তার বছরে আয় দশ লক্ষ টাকা। তার খামারে দেশি ছাগলের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি প্রজাতির ছাগল। প্রভাষক শামীম আহমেদ এর সফলতা দেখে অনেকেই ছাগলের খামার করতে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁও রোড ১২ নং ওয়ার্ড এলাকায় তার বাসা প্রভাষক শামিম আহমেদ তার কালিতলা এলাকায় পাশেই গড়ে তুলেছেন ছাগলের খামার। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় শখের ছাগল পালন এখন তার পেশা। ছাগলকে দেখাশোনা করার জন্য তিনটি লোক আছে। প্রভাষক শামিম আহমেদ তিনটি লোককে বেতন দিয়ে রাখা হয়। সে ছাগল দেখাশুনা করে তার তিনটি পরিবার বেঁচে আছে।

প্রভাষক শামীম আহম বলেন  আমি কলেজের ছাত্রদের লেখাপড়ার পাশাপাশি দশটি ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করি। এক বছরের মধ্যে ছাগল দু’টি  ৮টি বাচ্চা দেয়। ওই ছাগলগুলো বিক্রি করে তা থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হয়। এরপর সিদ্ধান্ত নেই ছাগলের খামার করার। এরপর নিজেই নিজ উদ্যোগে কারো পরামর্শ না নিয়ে ব্লাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগল কিনে ম্যাচিং পদ্ধতিতে খামার গড়ে তোলেন। এখন খামারে চার প্রজাতির ১৫০টি ছাগল রয়েছে। প্রভাষক শামিম আহ্মেদ কোন ট্রেনিং ছাড়াই ছাগল পালন পালন করছে।

তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই ছাগলের খাওয়ানো পরিচর্যা থেকে শুরু করে ছাগলের সবকিছু দেখাশুনা করে থাকি। তবে এ কাজে আমার পরিবারের লোকজনও সহযোগিতা করে। এছাড়াও বাড়ির পাশের পতিত জায়গায় আবাদ করেছেন হাইড্রোপ্রোনিক ঘাস (মাটি ছাড়া ট্রেতে আবাদ করা ঘাস)। যা ছাগলের জন্য উৎকৃষ্টমানের খাবার সেই ঘাস দিয়েই ছাগলের খাবারের বেশিরভাগ চাহিদা মেটাচ্ছেন।’

তিনি আরও জানান, এই একটি মাত্র প্রাণী যার বছরে দু’বার প্রজনন ক্ষমতা রয়েছে। প্রতিবার প্রজননে একাধিক বাচ্চা দেয়। রোগ-বালাইও কম হয়। বছরে একবার পিপিআর, গডপক্স ভ্যাকসিন দিলেই আর কোনও ওষুধ লাগে না। তাই অল্প খরচে বেশি আয় করা সম্ভব। যেখানে একটি বিদেশি গাভি পালন করলে প্রতিদিন ৩০০ টাকার খাবার খায়। আর সেখানে ৩০০ টাকা হলে প্রতিদিন ৩০টি ছাগলকে খাওয়ানো যায়। ছাগলের খাদ্য হিসেবে খাওয়ানো হয় গম, ভুট্টা ও ছোলা বুটের গুড়ো সেই সঙ্গে সয়াবিন ও খড়ের ছন। যা ছাগলের জন্য খুবই পুষ্টিকর। এছাড়াও দেশের বাজারে ছাগলের বেশ চাহিদার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই ছাগল রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করা সম্ভব।

প্রভাষক শামীম আহমেদ বলেন, ‘আমার ছাগলের খামার দেখতে প্রতিদিন লোকজন আসছেন। তারা আমার কাছে এ সম্পর্কে ধারণা ও নানা ধরনের পরামর্শ নিচ্ছেন। তারাও ছাগলের খামার গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।’

খামার দেখতে আসা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ছাগলের খামার গড়ে স্বাবলম্বী হওয়ার খবর শুনে খামারটি দেখতে এসেছি। এছাড়াও বাজারে ছাগলের চাহিদা বেশ রয়েছে ও দাম ভালো রয়েছে তাই ছাগল পালনে ভালো লাভবান হওয়ায় তার কাছ থেকে খামারের বিভিন্ন পরামর্শ নিলাম আমিও তার মতো ছাগলের খামার গড়ে তুলবো।’

ঠাকুরগাঁও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সুত্রে বলেন, ছাগল পালন করে মোটামুটিভাবে সফল হয়েছেন প্রভাষক শামিম আহমেদ। কিন্তু তিনি আমাদের কাছে কোন পরামর্শ নেন নাই।  পরামর্শ নিলে আমরা নিয়মিত তার ওই ছাগলের খামার পরিদর্শনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সব ধরনের পরামর্শ দিব। এখন অনেকেই ছাগলের খামার গড়ে তুলতে পরামর্শের জন্য আমাদের কাছে আসছেন। তাদেরকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

২৪ ঘণ্টা/এম আর/গৌতম

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *