সড়কে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার হলে নতুন করে কাজ শুরু হবে:সুজন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন আনন্দিপুর সড়কে নিম্নমানের ইট পাথর সহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে রাতের অন্ধকারে সড়কের মেকাডম কাজ হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ বিকাল ৪ টায় তা আকষ্মিক পরিদর্শন করেন এবং ঢালাই কাজের ব্যবহৃত ইট পাথর ও নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করে তা যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন।

নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সড়কের এই অংশটি থেকে সংস্কার করা কাজ আবার নতুন করে শুরু হবে বলে তিনি জানান।

তিনি এলাকাবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সড়কের কাজের গুণগতমান ঠিক-ঠাকভাবে বজায় রাখা হচ্ছে কিনা তা দেখভালের দায়িত্ব চসিকের পাশাপাশি এলাকাবাসীরও। যেহেতু এই সড়ক আপনারাই ব্যবহার করবেন এবং আপনাদের প্রদেয় ট্যাক্সেই অর্থায়ন সেহেতু কাজ ষোলআনা বুঝে নিবেন। সড়ক সংস্কার ও নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম বা নয়-ছয় হচ্ছে কিনা তা অবগত হওয়ার সাথে সাথে আমাকে জানান দ্রুত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে-ইনশাল্লাহ্।

তিনি ধারাবাহিক তদারকির অংশ হিসেবে পোর্ট কানেকটিং রোডের উন্নয়ন কাজ দেখতে গিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে সারা দেশের সড়ক পথে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবহণের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে এই সড়কটি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় চট্টগ্রামের বন্দর রক্ষণা-বেক্ষণ, আধুনিকায়ন এবং বন্দর সংশ্লিষ্ট সড়ক অবকাঠামোর যথাযথ উন্নয়ন ও পরিচর্যার ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা পূর্বের চেয়ে ৬ ধাপ এগিয়েছে। এতে গুরুত্বের সাথে ভূমিকা রেখে চলেছে পিসি রোড। তাই আমি দায়িত্ব গ্রহণের সাথে সাথে পিসি রোডের বিদ্যমান বেহাল অবস্থা নিরসনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।

তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও তদারকি থাকলে যে কোন কঠিন কাজ সু-সম্পন্ন করা সম্ভব। এর উদাহরণ হচ্ছে পোর্ট কানেকটিং রোড। প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন আজ বিকেলে সাগরিকা থেকে নিমতলা পর্যন্ত পোর্ট কানেকটিং রোড সরেজমিনে পরিদর্শন এবং নাগরিকদের সাথে বিদ্যমান সমস্যা নিয়ে কথা বলেন।

পরিদর্শনকালে তিনি সড়কের দুইপাশে সকল অবৈধ স্থাপনা দোকান-পাট, ফুটপাতের উপর রাখা নির্মাণ সামগ্রী এবং এই সড়কের বিভিন্ন অংশে দৃশ্যমান ট্রাক-লরি-কাভার্ডভ্যান -মুভার ও রিকশা ষ্ট্যান্ডগুলো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। তা না হলে এসব উচ্ছেদে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত হবে। তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেন যে কোন মূল্যে জন ও যান চলাচলের সকল প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হবে।

এছাড়া পোর্ট কলোনী অংশ থেকে নিমতলা পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশ দখল করে লরি, ট্রাক, কাভারভ্যানগুলো সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানান। নচেৎ জরিমানার মাধ্যমে রাস্তা অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে।

প্রশাসক পিসি রোডের দু’পাশের এলাকাবাসীকে ধৈর্য্য ধারণের আহবান জানিয়ে বলেন, পোর্ট কানেকটিং রোডের সংস্কার ও নির্মাণকাজ এখন অনেকটা দৃশ্যমান, আশা করা যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন হবে এবং এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

তিনি বড়পুল মোড়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষ্কর্যটি রক্ষণা-বেক্ষণ এবং তার আশে পাশে কোন ধরনের পরিবহন স্ট্যান্ড বা অবৈধ স্থাপনা বসিয়ে এর সৌন্দর্য ও পবিত্রতাহানী না করার পরামর্শ দেন।

তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে আরো আবেদন জানান যে, সিটি কর্পোরেশনের যে সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান দ্বারা জবর-দখল হয়ে আছে সে সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হলে এই সম্পত্তিগুলো অবশ্যই অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে এবং তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কৃত করা হবে।

এ সময় তিনি আরো উল্লেখ করেন করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তবে করোনার স্থায়ী কোন প্রতিষেধক এখনো আবিস্কৃত না হওয়ায় বিপদের ঝুঁকি রয়েই গেছে। তাই সামাজিক সচেতনতা ও দূরত্ব রক্ষা করে জীবন-যাপণের ক্ষেত্রে কোন প্রকার ঢিলেমি দেয়া সমীচিন নয়।

তিনি সতর্ক করিয়ে দেন যে, ঘর থেকে বের হলে মুখে মাক্স পরার বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং হ্যান্ড সেনিটাইজারও সাথে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ধরনের শিথিলতা না করে পরিস্থিতি মোকাবেলায় নগরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

এ সময় তিনি পথচারী, পরিবহণ চালক ও যাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে মাক্স বিতরণ করেন।

পরিদর্শনকালে মুক্তিযোদ্ধা হারেছ আহমদ, সাবেক কাউন্সিলর এস. এম.এরশাদ উল্লাহ, হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান, নিজাম উদ্দিনসহ চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *