নিজস্ব প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব এবিএম আজাদ বলেছেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে দেশে ক্রান্তিকাল চলমান রয়েছে। সংকটকালেও জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা গেলে দুর্নীতি হ্রাসসহ দেশে সুশাসন প্রতিষ্টিত হবে।
পাশাপাশি সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও বেসরকারী সংস্থাগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাŸদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। সরকারের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
তিনি বলেন, তথ্য পাওয়া সকল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ অনেক প্রেক্ষাপট জড়িত। তাছাড়া তথ্য অধিকার আইন আছে তা জনগনকে জানাতে হবে।
আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় আন্তজাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২০ উদযাপন উপলক্ষে জুম অ্যাপের মাধ্যমে আয়োজিত ভার্চুয়াল সিম্পোজিয়ামে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের তথ্য কমিশন ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রশাসন সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “তথ্য অধিকার-সংকটে হাতিয়ার, সংকটকালে তথ্য পেলে, জনগণের মুক্তি মেলে”।
বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ প্রনীত হয়।
তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও জনগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিতকরণে এই আইন করা হয়েছে। এ আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়নের পথ সুগম হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে কমিটি করে দেয়া হয়েছে।
আগামীতে ইউনিয়ন পর্যায়েও কমিটি করা হবে। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জনগনের চাহিদামত তথ্য আদান-প্রদান করছে কি না তা কমিটির প্রধানগনকে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। তাহলে এ আইন আরো বেশি কার্যকর হবে।
জনগনের চাহিদামত তথ্য প্রদানে গড়িমসি করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হবে। আবার যেসব তথ্য প্রদান করলে রাষ্ট্র বা সরকারের জন্য ক্ষতিকর বা হুমকি হবে সে সব তথ্য দেয়া যাবেনা।
জনগণকে কোন্ কোন্ ধরনের তথ্য দেয়া যাবেনা বা কেন দেয়া যাবেনা তা কারণসহ জানিয়ে দেবেন ঐ কর্মকর্তা। জনগণ যাতে আইনটি সম্পর্কে জানে সেজন্য প্রচার-প্রচারনা ও সচেনতার বিকল্প নেই।
বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে গনমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিছু কিছু ব্যক্তি ফেসবুক, ইউটিউব ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে। তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত ভার্চুয়াল সিম্পোজিয়ামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ।
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও সরকারের যুগ্ম সচিব মো. জাফর আলম।
জুম অ্যাপের মাধ্যমে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর সেকান্দর হায়াত খান, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোয়াজ্জম হোসাইন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মো. শাব্বির ইকবাল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী ও সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সিটিইউ) উপ-পুলিশ কমিশনার হামিদুল হক।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোঃ মিজানুর রহমান, বিভাগের বিভিন্ন জেলার ডিসি, এডিসি, ইউএনও, সিভিল সার্জন, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্টানের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা ভার্চুয়াল সিম্পোজিয়ামে অংশ নেন।
২৪ ঘণ্টা/রাজীব
Leave a Reply