পুলিশ ও জনতার সমন্বয়েই দেশ থেকে মাদক-জঙ্গী ও সন্ত্রাসসহ সকল প্রকার অপরাধমূলক কর্মকান্ড দূর করে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এজন্যই মূলত সারা বিশ্বে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম অত্যন্ত সফলজনক হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ ১৯৯২ সালে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করা হয়। যা বর্তমানে একটা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে পৌছেছে। আগামীতে সাধারণ জনগণ যদি স্বতস্ফুর্তভাবে পুলিশের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা নির্মূলে সহযোগিতা করে তাহলে অচিরেই এদেশ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশের মাধ্যমে উন্নত দেশে পরিণত হবে।
উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশ পুলিশ রেলওয়ে হেডকোয়ার্টার্স এর ডিআইজি মোঃ শামসুদ্দিন এনডিসি।
তিনি ২৬ অক্টোবর সকালে নীলফামারী সৈয়দপুরে রেলওয়ে জেলা পুলিশের আয়োজনে রেলওয়ে পুলিশ ক্লাবে অনুষ্ঠিত কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০১৯ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেছেন।
সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) সিদ্দিকী তাঞ্জিলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মোঃ রাজিব উদ্দিন, প্রথম আলো সৈয়দপুর প্রতিনিধি এম আর আলম ঝন্টু, সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি মনিরুল ইসলাম, সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শওকত আলী প্রমুখ।
এতে সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ সুপার সিদ্দিকী তাঞ্জিলুর রহমান বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং একটি সুনাগরিকত্বের পরিচায়ক। আগামীতে এ কনসেপ্টটি অত্যন্ত গুরুত্ববহণ করবে। এখন যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি ঠিক তেমনি আগামীদিনে কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের প্রতি মানুষ শ্রদ্ধাভরে সম্মান করবেন। কেননা এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ থেকে মাদক-জঙ্গী-সন্ত্রাসসহ সকল প্রকার অপরাধ কর্ম নির্মূলে সাফল্য অর্জন হচ্ছে। এর ফলে পুলিশ ও জনতার মাঝে যে সেতুবন্ধন তৈরী হয়েছে সেই বন্ধনের মাধ্যমে সমাজ থেকে সকল অন্যায়-অবিচার দূরীভূত করা সম্ভব হলে আমাদের সোনার বাংলা একটি রোল মডেল হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়াবে। তাই কমিউনিটি পুলিশিং এর সাথে সমাজের সচেতন ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভার পূর্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা থেকে বের হয়ে রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্ম হয়ে রেলওয়ে জেলা পুলিশের এসপি অফিস চক্কর দিয়ে প্রেসক্লাব হয়ে পুলিশ ক্লাবে এসে পৌছে।
এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ মমতাজুল ইসলাম, আরআই শাহ আলম, ওসি ওয়াচ এসআই হাবিবুল আলমসহ রেলওয়ে জেলা পুলিশের সদস্যবৃন্দ, কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যবৃন্দ ও সাংবাদিক শাহজাহান আলী ও দুলাল সরকার এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সকালে রেলওয়ে পুলিশ ক্লাবে শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও রেলওয়ে মাঠে রেলওয়ে পুলিশ বনাম রেলওয়ে বিভাগ প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় শহরের প্রায় ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ যাদু প্রদর্শণী পরিবেশন করেন সৈয়দপুরের খ্যাতনামা যাদু শিল্পী মনোয়ার হোসেন। পরে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের বিশেষ পুরস্কার ও অংশগ্রহণকারীদের শান্তনা পুরস্কার দেওয়া হয়।
এছাড়া সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি মনিরুল ইসলাম, সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম ডালিম কে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
Leave a Reply