আপীল বিভাগের রায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সেই ৫২টি স্থাপনা উচ্ছেদে করা যাবে

ইসলাম মাহমুদ, কক্সবাজার : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ‘প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার’ কলাতলী থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট পর্যন্ত গড়ে উঠা ৫২টি স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা নেই বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ।
এর ফলে সৈকতের পাড় ঘেঁষে নির্মিত বেশ কয়েকটি রেস্তোরা ও দোকানপাট ভেঙ্গে ফেলতে হবে। বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) সকালে হাইকোর্টে আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতি ছৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চের ১ নম্বর আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানান মামলায় ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এর আগে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) সৈকতের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় (ইসিএ) গড়ে ওঠা ৫২টি স্থাপনা (প্রতিষ্ঠান) উচ্ছেদে নোটিশ প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। এ নিয়ে ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল এসব স্থাপনা উচ্ছেদে উচ্চ আদালত রুল জারি ও স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
মূলত উচ্ছেদের আদেশ পাওয়া ৫২ টি স্থাপনা গড়ে তুলে ব্যবসা করতে কক্সবাজার পৌরসভা ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করেছিল। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনজিল বলেন, ‘আদালতের এ আদেশের প্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয় ও সরকারের পক্ষে হাইকোর্ট ডিভিশনে আপিল করা হয়। বৃহস্পতিবার শুনানির নির্ধারিত দিনে সৈকতের কলাতলী থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট পর্যন্ত গড়ে উঠা ৫২টি স্থাপনা উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বহাল থাকা রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। এতে সৈকতের ইসিএ এলাকায় গড়ে ওঠা ৫২টি স্থাপনা উচ্ছেদে কোন বাধা রইল না।’
শুনানিতে এডভোকেট মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে সরকার ইতিপূর্বে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়া ইতিপূর্বে জনস্বার্থের একটি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে সৈকত এলাকা কিছু স্থাপনা অপসারণও করা হয়েছিল। এমনকি আপিল বিভাগের একই রায়ে ইসিএ এলাকার ভেতরে থাকা স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে অপসারণেরও নির্দেশ ছিল। তারপরও সৈকতের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার বিভিন্ন স্থানে নানা ধরণের স্থাপনা গড়ে তুলে ব্যবসা পরিচালনা হয়ে আসছে। কক্সবাজার পৌরসভা বে-আইনিভাবে এসব স্থাপনা গড়ে তুলতে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে।’
এ নিয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফোরকান আহমদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সৈকত এলাকায় এসব বৈধ-অবৈধ স্থাপনা সৈকতে তৈরি হয়ে আসছে। উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও জায়গাটার মালিক জেলা প্রশাসন। এটা খাস জায়গা। খাস জায়গার দায়িত্ব কালেক্টরের। আর কালেক্টরের হলেন ডিসি, ল্যান্ড মিনিস্ট্রি।’ তাই এসব অবৈধ স্থাপনা অপসারণের পর প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে মন্তব্য করে কউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা যদি যৌথভাবে এটা না করি, আমি সরাই দিলাম, অপসারণ করলাম। কিন্তু জেলা প্রশাসন যদি এটা ধরে রাখতে না পারেন, অন্য একটা কিছু করার মত ব্যবস্থা না করেন; তাহলে এ সমস্যাগুলো হবেই।’ কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর তা কার্যকর করার জন্য দ্রুত উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হবে।
২৪ঘণ্টা/এন এম রানা/

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *