ধর্ষকদের তাড়িয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করল ছাত্রলীগ নেতা

ভোলার মনপুরার নির্জন চরপিয়ালে বোটে করে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণকারী চারজনকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়ার পর ওই গৃহবধূকে আবার ধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগের এক নেতা।

শনিবার মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম (৩০) এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।

চরফ্যাশনের দক্ষিণ আইচার বাবার বাড়ি থেকে স্পিডবোটে করে মনপুরায় শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পথে গৃহবধূ প্রথমে গণধর্ষণ ও পরে ছাত্রলীগ নেতার ধর্ষণের শিকার হন।

এ ঘটনায় ধর্ষিতা গৃহবধূ বাদী হয়ে মনপুরা থানায় পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়।

মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন জানান, বাবার বাড়ি থেকে বেতুয়া লঞ্চঘাট হয়ে শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় স্পিডবোটে ওই গৃহবধূ মনপুরায় শ্বশুর বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বোটে থাকা যাত্রী দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামের বেলাল পাটোয়ারী (৩৫), মো. রাসেদ পালোয়ান (২৫), শাহীন খান (২২) ও কিরন (২৬) বোটটি পার্শ্ববর্তী নির্জন চরে নিয়ে যায়। সেখানে আড়াই বছরের শিশু সন্তানের সামনেই গৃহবধূকে তারা ধর্ষণ করে।

ওসি আরো জানান, পরে খবর পেয়ে বোটের মালিক দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম (৩০) ঘটনাস্থল গিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। তিনি ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন এবং বিষয়টি নিয়ে কথা বললে সেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ কাজল জানান, চরে থাকা মহিষের বাথানিয়ারা ঘটনাটি তাকে জানালে তিনি মনপুরা থানার ওসিকে বলেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চর থেকে পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে মনপুরা থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।

গৃহবধূ জানান, চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে মনপুরার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ না পেয়ে তিনি এক স্পিডবোটে ওঠেন। বোটে আরও দু’জন যাত্রী ওঠে।

পথিমধ্যে জনতার খালের পাড় থেকে আরও দু’জন ওঠে। একপর্যায়ে ওই যাত্রীরা স্পিডবোট চালককে চরপিয়ালে নিয়ে যেতে বাধ্য করে। সেখানে তাকে চারজন ধর্ষণ করে।

এরপর জনতার খাল থেকে স্পিডবোট নিয়ে চালক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুলের কাছে নিয়ে যান। নজরুল তখন চারজনকে মারধর করে ৩ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।

এরপর নজরুল চরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে এবং এক হাজার টাকা দেয়। নাম না বলতে হুমকি দেয়। নাম বললে ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ারও হুমকি দেয় নজরুল।

এ ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার করে স্পিডবোটের চালক রিয়াজ জানান, গৃহবধূকে চরপিয়ালে নিয়ে চারজন গণধর্ষণ করে। এরপর ঘটনাটি স্পিডবোটের মালিক নজরুলকে জানান।

কিন্তু নজরুল স্পিডবোটে করে গৃহবধূকে আবার চরপিয়ালে নিয়ে ধর্ষণ করে। চরের ভেতর ওই গৃহবধূকে নিয়ে নজরুল এক ঘণ্টা থাকে।

মনপুরা থানার ওসি জানান, স্পিডবোটটি জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

আজ রোববার দুপুরে মেডিকেল পরীক্ষা জন্য ওই নারীকে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *