চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। স্থানীয়দের মূল্যবান বাড়ি-ভিটা অধিগ্রহন করে সম্প্রসারিত হয়েছে আজকের কর্মমুখর বন্দর। এই সমৃদ্ধ অঞ্চলের জন্য ত্যাগ স্বীকারকারী স্থানীয় জনসাধারণ ছাড়াও রুটি-রুজির জন্য এখানে আসা দেশের ৬৪ জেলার মানুষ চিকিৎসার মত একটি মৌলিক অধিকার সহজে ভোগ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, তাছাড়া বন্দর এলাকায় অবস্থিত দুই দুইটি ইপিজেড শিল্পাঞ্চলে কর্মরত লাখ লাখ নারী শ্রমিকের জন্য কোন মাতৃসদন হাসপাতাল নেই। যা অত্যন্ত মর্মবেদনাদায়ক। বছরের পর বছর ধরে আমি নিজেও বন্দর এলাকায় একটি মাতৃসদন কাম জেনারেল হাসপাতাল করার জন্য সোচ্ছার ছিলাম। অবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় আমি গত ৬ আগস্ট থেকে নগরবাসীর খেদমত করার সুযোগ প্রাপ্ত হয়েই এই এলাকার চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষের দীর্ঘদিনের আকুতি ও দাবী আমলে নিয়ে বন্দর এলাকায় একটি মাতৃসদন কাম জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার জন্য গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নানের কাছে উপানুষ্ঠানিক পত্রের মাধ্যমে একটি অফিসিয়াল প্রস্তাব পাঠাই।
তিনি আরও বলেন, আমার এই প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত হাসপাতালের বাস্তবায়ন ও প্রয়োজনীয় ভূমি চিহ্নিত করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে দেন। উক্ত কমিটি বর্তমানে এই বিষয়ে কাজ করছেন। তিনি বলেন, এটা আমাদের জন্য সুখবর।
উল্লেখ্য, এর আগে ঢাকায় মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় যৌক্তিকতা উপস্থাপন করেন প্রশাসক।
হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর এলাকা আমার নগরীর গর্বের ধন। এই এলাকায় স্থানীয়-অস্থানীয় সব মানুষ আমার আপনজন। তাদের সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে আমার প্রস্তাবিত মাতৃসদন কাম জেনারেল হাসপাতাল বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমার সর্বাত্মক সহযোগিতা ও চেষ্টা অব্যাহত থাকবে- ইনশাল্লাহ।
আজ সকালে টাইগারপাসস্থ চসিক প্রশাসক দপ্তরে নাগরিক উদ্যোগ নেতৃবৃন্দ এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত হাসপাতালের জন্য ৬টি ভূমির প্রস্তাবনা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এই ছয়টি ভূমি হলো যথাক্রমে-১. বন্দরটিলাস্থ টিসিবি ভবনের পিছনের মাঠ, ভূমির মালিক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২. পুরাতন পোর্ট মার্কেট সংলগ্ন রেল লাইনের উত্তর পার্শ্বে রেলওয়ের ভূমি। ৩. সল্টগোলা রেল ক্রসিং আজাদ কলোনী মাঠ, ভূমির মালিক সিডিএ। ৪. নিমতলা ট্রাক টার্মিনালের অপর পাশে, ভূমির মালিক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ৫. আউটার রিং রোডের পূর্ব পার্শ্বে বা কান্ট্রি সাইটে আনন্দ বাজার থেকে ধুমপাড়া পর্যন্ত ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং বড় বড় সরকারি খালি ভূমি। ৬. র্যাব-৭ সংলগ্ন এলাকায় ‘নারী প্রজেক্ট’ ভূমির মালিক বেপজা।
সিটি প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের হাতে এসব লিখিত প্রস্তাব তুলে দেন নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, সমন্বয়কারী মোরশেদ আলম, আবদুর রহমান মিয়া প্রমুখ।
২৪ ঘণ্টা/রিহাম
Leave a Reply