কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড : সীতাকুণ্ডে বিয়ের করার কথা বলে হোটেলে নিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এক তরুণী। এ ঘটনায় পুলিশ হোটেল ম্যানেজারসহ অভিযুক্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করে।
গত শনিবার বিকেলে থেকে রোববার রাত ২টা পর্যন্ত সীতাকুণ্ডের জলসা আবাসিক হোটেলে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে।
থানায় মামলা সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার মধ্যম ভাটেরখীল গ্রামের কাসেম মিস্ত্রির ছেলে নয়নের (২২) সাথে এক মাস আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় মিরসরাই উপজেলার ওই তরুণীর।
এরপর থেকে মোবাইল ফোনে নয়নের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ হয়। নয়ন গত শনিবার বিকাল ৪টার সময় মোবাইলে বিয়ে করার কথা বলে ওই তরুণীকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে সীতাকুণ্ডে আসতে বলে।
তরুণী সীতাকুণ্ডে আসলে বিশ্রামের কথা বলে নয়ন তাকে পৌর সদরের জলসা আবাসিক হোটেলের ৪র্থ তলার ৪০১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। এসময় নয়ন তরুণীকে জোর করে নেশা জাতীয় ট্যাবলেট খাওয়ায়। এরপর তাকে পর পর তিনবার ধর্ষণ করে।
রাত ১০ টার দিকে নয়ন খাবার আনার কথা বলে হোটেলের নিচে যায়। এরপর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আরো ৫ যুবক পর্যায়ক্রমে রুমে গিয়ে রাত দেড়টা পর্যন্ত তাকে ধর্ষণ করে। এরপর তারা বাহিরে চলে যায়।
রাত দুইটার দিকে হোটেল ম্যানেজার তরুণীকে জানান, আরো তিনজন যুবক হোটেলে আসবে। এ কথা শুনার পর তরুণী আরেকটি রুমে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। তিন যুবক তখন তরুণীকে না পেয়ে নিচে চলে যায়।
মামলা সুত্রে আরো জানা যায়, রাত দুইটার পর ঐ তরুণী হোটেল থেকে বের হয়ে বাড়ির উদ্যেশ্যে রওয়ানা দিলে গভীর রাত হওয়াতে বাড়ি যাওয়ার গাড়ি না পেয়ে সারারাত পৌরসদর বাসস্ট্যান্ডেই কাটায়। পরদিন সকালে বাড়ি ফিরে যায়।
এরপর আজ সোমবার সকালে তরুণী সীতাকুণ্ড মডেল থানায় গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। অভিযোগ পেয়ে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের একটি টিম হোটেল জলসা ও পৌর সদরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করে।
আটকরা হলেন- উপজেলার ভাটেরখীল গ্রামের মো. নুর নবীর ছেলে মোহাম্মদ আলীম হোসেন (২২), গুলিয়াখালী খালিদ মেম্বারের বাড়ির মোহাম্মদ জামাল উল্লাহ মোহাম্মদ রিফাত (১৯), দক্ষিণ ভাটেরখীল গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে মোহাম্মদ ইমন ইসলাম (২০), একই এলাকার নেছার আহমেদের ছেলে রনি (২০), জসিম উদ্দিনের ছেলে বারেক (২২), আবুল কাসেম মিস্ত্রির ছেলে নয়ন (২২) এবং জলসা হোটেলের ম্যানেজার নুর উদ্দিন (৩৮)।
এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বনিক বলেন, ধর্ষণের শিকার তরুণীর সাথে এক মাস আগে বিয়ের অনুষ্ঠানে নয়নের পরিচয় হয়। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে নেশা জাতীয় ট্যাবলেট খাইয়ে নয়নসহ তার বন্ধুরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।
২৪ ঘণ্টা/রাজীব
Leave a Reply