সীতাকুণ্ডে ২৫০ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ : কৃষকের মুখে হাসি

sitakundo-pepe

কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড : সীতাকুণ্ডে পাহাড়ে পেঁপে চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এখন পাহাড়ে সারাবছরই চাষ হচ্ছে পেঁপের। যা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ফলন ও লাভ ভালো হওয়ায় এখানকার প্রায় দেড় হাজার কৃষকের মাঝে পেঁপে চাষে সচ্ছলতা এসেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রায় সর্বত্রই কমবেশি পেঁপে চাষ করছেন কৃষকরা। তবে সবচেয়ে বেশি পেঁপে চাষ হয় কুমিরা ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায়।

দেখা গেছে, সোনাইছড়ি পাহাড় এখন পেঁপে বাগানে পরিণত হয়েছে। ব্যক্তিগত জমি ও সরকারি পাহাড় লিজ নিয়ে এখানে বেশ কয়েকটি পেঁপে বাগান গড়ে তুলেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

এলাকাবাসী জানান, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বার আউলিয়ার ফুলতলা পাহাড়ে ইতিমধ্যে পেঁপে চাষের জন্য সুপরিচিতি। পার্শ্ববর্তী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পাহাড়েও উল্লেখযোগ্য পেঁপে চাষ হয়ে থাকে। ফলে এখান থেকে পেঁপে কিনে নিয়ে যেতে প্রতিদিন চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারী ব্যবসায়ীরা ভীড় করেন।

ফুলতলার পেঁপে চাষী মো. নাসির উদ্দিন জানান, তিনি নিজে ৫০ শতক জমিতে পেঁপে চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে কয়েকদফা পেঁপে বিক্রি করেছি। তিনি জানান, শুধু কুমিরা এলাকাতেই পেঁপে চাষ করে অনেক কৃষক নিজেদের ভাগ্য বদল করেছেন।

কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, চাষাবাদে সার, কীটনাশক, শ্রমিক মুজুরি ও চারা ক্রয়সহ বিভিন্নভাবে তার যা খরচ হয়েছে তার দ্বিগুণ লাভ করেছি। তিনি জানান, শীত ও বর্ষা সবসময় তারা পেঁপে চাষ করেন। পাহাড়ি এলাকায় পেঁপে চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বর্ষায়ও গাছের গোড়ায় পানি না জমায় তেমন ক্ষতি হয় না।

কৃষকরা জানান, চলতি বর্ষায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হলেও পেঁপে বাগানগুলোর ক্ষতি হয়নি। ফলে অনেকটা নিশ্চিন্তে চাষাবাদ করছেন তারা। গাছেও ফলন খুব ভালো। প্রতি কেজি পেঁপে পাইকারী দরে ১৫/২০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। তবে সরকারিভাবে পেঁপে চাষিদের তেমন কোনো সহায়তা প্রদান করা হয় না বলে অভিযোগ চাষিদের।

যদি সহজ শর্তে কৃষি ঋণসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয়া হত তাহলে কৃষকরা এই ফল চাষে অনেক বেশি আগ্রহী হতেন বলে দাবি তাদের।

পেঁপে চাষে স্থানীয় চাষিরা স্বচ্ছল হচ্ছেন জানিয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, সীতাকুণ্ডে ২৫০ হেক্টর জমিতে দেড় হাজার কৃষক পেঁপে চাষ করেন। সোনাইছড়ি থেকে ছোট কুমিরার সুলতানা মন্দির পর্যন্ত এলাকায় পাহাড়ে প্রচুর পেঁপে চাষ হয়। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এসব পেঁপে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে।

আরো:: হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে কৃষকের মৃত্যু

২৪ঘন্টা/কামরুল ইসলাম দুলু/রাজীব.

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *