নিলয় ধর, যশোর প্রতিনিধি : পৃথিবী ব্যাপী চলছে করোনা মহামারির প্রকোপ। এই মহামারিকে দমনে যশোরে এবার দেবী সুভগাকে অর্চনার মাধ্যমে কুমারী পূজা সম্পন্ন হয়। শনিবার (২৪ অক্টোবর) যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম ও মিশনের আয়োজনে পাঁচ বছর বয়সী কন্যা ঐশ্বানী ভট্টাচার্য্যকে ‘সুভগা’ রূপে পূজা করা হয়েছে।
আশ্রম মিশন অধ্যক্ষ স্বামী জ্ঞানপ্রকাশানন্দ নিজে হাতে এই পূজা সম্পন্ন করে। শাস্ত্র অনুসারে এ কুমারীর পুজো করলে রোগ নাশ হয়। মহাঅষ্টমীর দিন সকাল ১১টায় আশ্রমে অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। এই সময় স্বাস্থ্যবিধী মেনে পূজা আচারে অংশ নিতে আশ্রম আঙ্গিনায় সমবেত হন হাজারো পূর্ণার্থী।
কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের নির্দেশনায় এই বছর ঢাকায় কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত না হলেও ঢাকার বাইরে হয়েছে। পরম্পরা মেনে যারা কুমারী পূজা করে আসছেন তারা এই পূজা করছে।
এই দিকে দুর্গাপূজার ৫ দিনের মধ্যমণি মহা অষ্টমীতে যশোরের সকল মন্ডবে মহামায়ার ভক্ত অনুরাগীদের পদচারণা ছিল বিশেষ চোখে পড়ার মতো। মন্দিরে মন্দিরে ধূপের সুগন্ধ, ঢাক ঢোলের বাদ্যের সাথে উলু শঙ্খধ্বণী সকল জ্বরা, দুঃখ অতিক্রম করে সুখ সমৃদ্ধির বার্তা দেয়। শাস্ত্র বিহীত মহা অষ্টমী পূজার পাশাপাশি মহা সন্ধিক্ষণের ৪৮ মিনিটের সন্ধি পূজা ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আসুরিক মনোভাবের বলিদানের মাহত্ব যেমন শেখায় তেমনি শতঅষ্ট প্রদীপের আলো যাবতীয় অজ্ঞতাকে পুড়িয়ে জ্ঞানের প্রজ্ঞায় উদ্ভাসিত করে হৃদয়কে। দেবী চামুণ্ডাকে দেখানো এই প্রদীপ শিখার আগুন যেন হিংসা, দৈহিক বাসনা ও ভোগের আকাঙ্খাকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়-এ মিনতি করে সকলে।
রোববার (২৫ অক্টোবর) মহানবমী। এই দিনে দেবী দুর্গাকে প্রাণ ভরে দেখে নেয়ার ক্ষণ।
কালিকাপুরাণ-এ মহানবমীতে যথাবিধানে বলিদান এবং ঐশ্বর্যলাভের নিমিত্ত জপ ও হোম করতে বলা হয়েছে। দেবী দুর্গার নাম বারবার উচ্চারণ করাকে ‘জপ’ বলে। জপ আসলে মাকে স্মরণ করা। এই জপের সংখা একশত ৮এক হাজার ৮ বা লাখও হতে পারে।
অনেক স্থানে মহানবমীর দিন হয় কুমারী পুজো। এ দিন অগ্নিকে প্রতীক করে সকল দেবদেবীকে আহুতি দেয়া হয়। অগ্নি সকল দেবতার যজ্ঞভাগ বহন করে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে থাকে। এই দিনই দুর্গাপুজোর অন্তিম দিন। পরের দিন কেবল বিজয়া ও বিসর্জনের পর্ব। নবমী নিশিথে উৎসবের রাত শেষ হয়। নবমী রাত বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির। এই রাতের পর পিতৃআলয়ে কণ্যা রূপী মা চণ্ডী থাকবেন আর মাত্র কয়েক প্রহর।
২৪ ঘণ্টা/রাজীব
Leave a Reply