চট্টগ্রাম ডেস্ক : চট্টগ্রামের ইস্পাহানি গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় দেড় কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে এ চার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৮.২৭ কোটি টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদঘাটিত হয়।
ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ইস্পাহানি গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। যা ন্যায় নির্ণয়নের জন্য চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটে প্রেরণ করা হবে।
ইস্পাহানী গ্রুপের ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া প্রতিষ্ঠান ৪টি হলো নগরীর লালখান বাজারের দি এভিনিউ হোটেল এন্ড স্যুটস, (ভ্যাট নিবন্ধন নং-১৯০৯৮৭৪-০৫০৩), পিটস্টপ সুইটস এন্ড বেকারি (ভ্যাট নিবন্ধন নং-০০০০১৮৪৮৮-০৫০৩), পিটস্টপ শো-রুম,(ভ্যাট নিবন্ধন নং-০০১৯০৯৮৩৮-০৫০৩) এবং পিটস্টপ সুপার ষ্টোর (ভ্যাট নিবন্ধন নং- ০০১৯০৯৮৩৮-০৫০৩)।
মঙ্গলবার (০৩ নভেস্বর) মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।
তিনি বলেন, ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদ ও সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে।
অনুসন্ধানে চট্টগ্রামের ইস্পাহানি গ্রুপের ৪ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদঘাটন করা হয়।
৪ প্রতিষ্ঠান সর্বমোট ৮৯,৭৮,৭৭৬ ভ্যাট পরিহার করেছে এবং এই পরিহারকৃত ভ্যাট এর উপর সুদ বাবদ ৬০,০৬,৬৮৮ টাকা প্রযোজ্য। ফলে সুদসহ প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠান ৪টি।
ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে জানা যায়, দি এভিনিউ হোটেল এন্ড স্যুটস ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৮৭,৭২,১৪৬ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১,২৯,৯৩,৮১৪।
এ প্রতিষ্ঠানে ৪২,২১,৬৬৮ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৬,৩৩,২৫০ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। যথাসময়ে ভ্যাট পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে ফাঁকি দেওয়া রাজস্বের সাথে আরো ৪,৯৯,৫৬৯ টাকা সুদ যোগ করে প্রদান করতে হবে।
একইভাবে পিটস্টপ সুইটস এন্ড বেকারি ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ১২,৫৪,৬৯,৯৪৬ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১২,৯৭,২৩,৩০৭।
এক্ষেত্রে ৪২,৫৩,৩৬১ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৬,৩৮,০০৪ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এর সাথে মাসিক ২% হারে সুদ ৭,২১,১২৬ টাকা যোগ হবে।
পিটস্টপ শো-রুম নামীয় প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৬,০৭,০৬,২৫৯ টাকা। তবে জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১৬,৪৫,২৪,৫১৫ টাকা।
এ প্রতিষ্ঠানে ১০,৩৮,১৮,২৫৬ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে ৪৪,৩২,৪২১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মাসিক ২% হারে ৪১,৭১,৯১৪ টাকা সুদ আদায়যোগ্য।
পিটস্টপ সুপার ষ্টোর জানুয়ারি/১৮ হতে আগস্ট/২০ পর্যন্ত সময়ে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ১,৮১,৯৬,১৪৫ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ৮,৮৫,৭৪,২৩৮।
এক্ষেত্রে ৭,০৩,৭৮,০৯৩ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৩২,৭৫,১০১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ ৬,১৪,০৭৯ টাকা আদায়যোগ্য হবে।
২৪ ঘণ্টা/রাজীব প্রিন্স
Leave a Reply