আইপিএলে পঞ্চম শিরোপা জিতল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স

আইপিএলে পঞ্চম শিরোপা জিতে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জেতার রেকর্ডটা পোক্ত করেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। প্রথমবারের মতো টানা দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হল দলটি।

দুবাইয়ে ফাইনালে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দিল্লী ক্যাপিটালসের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। বোলিংয়ে এসে ইনিংসের প্রথম বলেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে সাফল্য এনে দেন ট্রেন্ট বোল্ট। বোল্টের লাফিয়ে ওঠা এক বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে চলে আসেন ওপেনার মার্কাস স্টয়নিস।

নিজের পরের ওভারে ফের আঘাত হানেন বোল্ট। তার লেগ স্টাম্পের এক ডেলিভারি খোঁচা দিয়ে উইকেটরক্ষকের কাছে পাঠান আজিঙ্কা রাহানে। ৪ বলে ২ রান করেন তিনি।

পরের ওভারেই শিখর ধাওয়ানকে হারায় দিল্লী ক্যাপিটালস। স্পিনার জয়ন্ত যাদবের বলে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন ১৫ রান করা ধাওয়ান। ২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দিল্লী ক্যাপিটালসের ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন শ্রেয়াস আইয়ার এবং রিশাভ পান্ট। অধিনায়ককে সঙ্গে নিয়ে ৯৬ রানের জুটি গড়েন পান্ট। দুজনই তুলে নেন অর্ধশতক। ৩৮ বলে ৫৬ রান করে নাথান কোল্টার-নাইলের বলে আউট হন পান্ট।

ইনিংসের সমাপ্তিটা তেমন ভালো হয়নি দিল্লী ক্যাপিটালসের। শেষ ৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৩৮ রান তুলতে সক্ষম হয় দলটি। ট্রেন্ট বোল্টের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান শিমরন হেটমেয়ার। হেটমেয়ার মাত্র ৫ রান করে ফিরে গেলে দিল্লী ক্যাপিটালসের বড় স্কোর গড়া শঙ্কার মধ্যে পড়ে যায়। শেষদিকে অক্ষর প্যাটেল ৯ বলে ৯ রান করে আউট হন।

শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা শ্রেয়াস আইয়ার ৫০ বল মোকাবেলা করে ১৩০ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ৬৫। এ ইনিংস খেলার পথে এ মৌসুমে ৫০০ রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন আইয়ার। ২০ ওভার ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৫৬ রান করতে সক্ষম হয় দিল্লী ক্যাপিটালস। বোল্ট তিনটি ও কোল্টার-নাইল দুইটি উইকেট নেন।

জবাব দিতে নেমে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক আর রোহিত শর্মা। ডি কক ঝড় তুললেও সেই ঝড় স্থায়ীত্ব পায়নি। ১২ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে মার্কাস স্টয়নিসের বলে উইকেটরক্ষক রিশাভ পান্টের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তবে অপর প্রান্তে অব্যহত ছিল রোহিত শর্মার ঝড়। প্রথম পাওয়ারপ্লেতেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ৬১ রান তুলে ফেলতে সক্ষম হয়।

প্রথম উইকেটের মতো দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতেও রান হয় ৪৫। রোহিত শর্মা আর সূর্যকুমার যাদবের ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন যাদব। মূলত, দারুণ ব্যাটিং করতে রোহিতের উইকেট বাঁচাতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন যাদব। ১ চার ও ১ ছক্কায় ২০ বলে ১৯ রান করেন তিনি। এরপর রোহিতের সঙ্গে হাল ধরেন ইশান কিষাণ।

কিষাণের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শিরোপার সুবাস পেতে থাকে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ১৫ ও ১৬তম ওভার মিলিয়ে ২১ রান আসলে জয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জন্য শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

দলীয় ১৩৭ রানের মাথায় রোহিত শর্মার উইকেট তুলে নেন আনরিক নরকিয়া। ৫১ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন রোহিত। ইনিংস লম্বা করতে পারেননি কিরন পোলার্ড। ৯ রান করে বোল্ড হন কাগিসো রাবাদার বলে। শিরোপা থেকে এক রান দূরে থাকা অবস্থায় বিদায় নেন হার্দিক পান্ডিয়া। এরপর ক্রুনাল পান্ডিয়া মাঠে নেমে জয়সূচক রান করেন। ১৯ বলে ৩৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন কিষাণ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৫৬/৭ (স্রেয়াশ ৬৫*, ঋষভ পন্ত ৫৬, ধাওয়ান ১৫; ট্রেন্ট বোল্ট ৩/৩০, নাথান কোল্টার নিল ২/২৯)।

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ১৮.৪ ওভারে ১৫৭/৫ (রোহিত ৬৮, ইশান ৩৩*, ডি কক ২০, যাদব ১৯)।

ফল: মুম্বাই ৫ উইকেটে জয়ী।

ফাইনালে সেরা খেলোয়াড়: ট্রেন্ট বোল্ট। 

সেরা ব্যাটসম্যান: লুকেশ রাহুল(৬৭০ রান)।

সেরা বোলার: রাবাদা(৩০ উইকেট)।

২৪ ঘণ্টা/রিহাম

 

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *