৫৪ তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ

চবি প্রতিনিধিঃ ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর যাত্রা শুরু হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি)। আজ ৫৪ তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। চারটি বিভাগ, ৭ জন শিক্ষক ও ২০০ শিক্ষার্থী নিয়ে পথ চলা শুরু। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদে ৪৮টি বিভাগ, ৬টি ইনস্টিটিউট ও প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। সঙ্গে আছেন ৯২০ জন শিক্ষক।

এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য আছে ১৩টি আবাসিক হল ও একটি ছাত্রাবাস।চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীতে অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক নাম শাটলের ক্যাম্পাস। ১৯৮০ সালে চালু হওয়া শাটল ট্রেন চবি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন। ফলে পৃথিবীর একমাত্র শাটলে ট্রেনের ক্যাম্পাসও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

দেশের অন্যতম এ বিদ্যাপীঠ অনেক গুণীজনের জন্ম দিয়েছে। সংস্পর্শ পেয়েছে বরেণ্য মনীষার। উপমহাদেশের খ্যাতিমান ভৌত বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জামাল নজরুল ইসলাম, উপমহাদেশের সনামধন্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক আবুল ফজল, আলাউদ্দিন আল আজাদ, সৈয়দ আলী আহসান, মুর্তজা বশীর, ঢালী আল মামুন, সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মান্নানসহ বহু কীর্তিমান মনীষী জ্ঞানের আলো ছড়িয়েছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. শাহাদাত হোসেন দুটি নতুন মাছের প্রজাতি শনাক্ত করে এবং প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী রক্ষা ও গবেষণায় অবদানের জন্য শিক্ষক মনজুরুল কিবরিয়া পেয়েছেন দেশি-বিদেশি সম্মাননা। ড. শেখ আফতাব উদ্দিনের কম খরচে সমুদ্র পানি সুপেয় করার পদ্ধতি আবিষ্কার, ড. আল আমিনের লেখা বই যুক্তরাষ্ট্রের ৬টি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেফারেন্স বুক হিসেবে নির্বাচন, অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান চৌধুরী বঙ্গোপসাগর নিয়ে মানচিত্র তৈরিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক নিজ নিজ ক্ষেত্রে রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর।

পিছিয় নেই শিক্ষার্থীরাও। ব্যাঙের নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করে সর্বকনিষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সাজিদ আলী হাওলাদার, দেশের সীমানা ছাড়িয়ে চবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র শাখাওয়াত হাসান ও তার দলের নাম ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।

এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব, চাঁদপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ১১জন সচিব ও ৩০ জন অতিরিক্ত সচিব পদসহ বিভিন ক্ষেত্রে চবি শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব পালন করেছেন।

দেশের ক্রান্তিকালেও এ বিশ্ববিদ্যালয় রেখেছে অগ্রণী ভূমিকা। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছিলো এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। মহান মুক্তিযুদ্ধে চবির ১৫ জন শহীদ হন।

দেশ সেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান মল্লিক। বর্তমানে ১৮তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

২৪ ঘণ্টা/রিহাম/মেহেদী

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *