নিজস্ব প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শাহমীরপুর গ্রামের মৃত ফজল আহম্মদের ষাটোর্ধ্ব স্ত্রী মরিয়ম বেগম। তার তিন ছেলে এক মেয়ে। তিন সন্তানই মোটামুটি স্বাবলম্বী বলা যায়।
কিন্তু এ বয়সে মরিয়ম বেগমের আরাম-আয়েশে দিন কাটানোর কথা। সেখানে দু’বেলা খাবার জোটাতে মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হয় তাকে। মাঝেমধ্যে বের না হলে খাবার জোটে না তার ভাগ্যে। রোজা রেখে কাটাতে হয়। চার সন্তানের জননী মরিয়ম বেগম। বড় ছেলে কোরআনে হাফেজ মসজিদে চাকরি করেন। মেঝো ছেলে ফার্ণিচার মিস্ত্রি ও ছোট ছেলে ট্রাক সমিতির ম্যানেজার। ৪র্থ মেয়ে বিবাহিত শ্বশুরবাড়িতে রয়েছেন।
বড়উঠান ইউনিয়নের মিস্ত্রিজান বাপের বাড়ির একাধিক এলাকাবাসী জানান, স্বামীহারা বিধবা মরিয়ম খুব কষ্টে আছেন। তিন ছেলে মোটামুটি আজ বিয়েশাদি করে নিজেদের সংসারে স্যাটেল। কিন্তু গর্ভধারিণী মাকে আজ দু’বেলা খাবারের জন্য মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হচ্ছে।
গত ২১ নভেম্বর উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে ছেলেদের বিরুদ্ধে নালিশ দিতে এসে এসব কথা শোনালেন বৃদ্ধা মা।
ভূক্তভোগি মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমার বড় ছেলে জসিম ও ছোট ছেলে হালিম খুব বেশি কষ্ট দিচ্ছে আমায়। বহু কষ্টে ছোট ছেলেকে বিয়ে করাইছিলাম। দুমাস পরে দেখি ছেলের বউসহ আমাকে নির্যাতন করে। এমনি আমার স্বর্ণ ও গরু বিক্রি করে আলাদা বাসায় চলে যায়। বাড়ির বিদ্যুৎ বিলও দিচ্ছে না। শাড়ি ও আলনা নিয়ে যাবার পাশাপাশি আমার নামাজ পড়ার চেয়ারটুকুও নিয়ে গেছে। গত ৩/৪ মাস আমি নাজিম মেম্বারের কাছে বিচার চাইলাম। উল্টো মেম্বার আমাকে বকাঝকা করল। আমি চেয়ারম্যানের কাছে এর সুবিচার চাই।’
এদিকে, মরিয়ম বেগমের ছোটছেলে মো. হালিম বলেন, গতকাল সকালে এলাকার মেম্বারসহ আমরা দুভাই মায়ের কাছে গিয়েছিলাম। মা বলল, এলাকার চেয়ারম্যান যেভাবে সমাধা দেবেন তিনি তা মানবেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি চেয়ারম্যানের কাছে যাব।’
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা জানান, বিষয়টি খুবই কষ্টদায়ক। খোঁজ নিয়ে বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করব।’
২৪ ঘণ্টা/রিহাম/মহিউদ্দিন
Leave a Reply