বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার: খসরু

দেশনেত্রী ‘গণতন্ত্রের মা’ বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে জেলখানায় রেখে সরকার তিলে তিলে মারার ব্যবস্থা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ‘খুনের আসামি জামিন পাচ্ছে, ধর্ষক-শিশুধর্ষক জামিন পাচ্ছে, কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। দেশের মানুষের কাছে এটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, সবাই জামিন পেলেও নির্দোষ বেগম জিয়া জামিন পাবে না।’

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে “প্রতিহিংসার রাজনীতি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশে কোনও বিচার ব্যবস্থা নেই। সরকারের মন্ত্রীরা বলে দেয় মামলার রায় কবে হবে। দশ দিনে বিচার হবে নাকি ১৫ দিনে। এটা কি তারা বলতে পারেন? এর শাস্তি হয়ে যাবে ওর শাস্তি হয়ে যাবে এটাও সরকারের মন্ত্রীরা বলে দেন। দেশের বিচার ব্যবস্থার একটি ধারা আছে ‘ডিউ প্রসেস অফ ল’- এই প্রসেসে কার কী হবে সেটা বিচার বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু আজ বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার।’

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘যে দেশে প্রধান বিচারপতিকে বিচারালয় থেকে জোর করে অপসারণ করা হয় এবং মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়, যে দেশে তারেক রহমানের পক্ষে রায় দেয়ার কারণে বিচারপতিকে চাকরিচ্যুত হতে হয়, যে দেশে মন্ত্রীরা কার কী বিচার হবে আগেভাগে বলে দেযন- সেখানে সাধারণ মানুষ কীভাবে ন্যায়বিচার আশা করবেন।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বিচার পাবেন না। আপনাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে, দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের মালিকানা নিজেদের হাতে তুলে নিতে হবে। আপনারা যখন দেশের মালিকানা আপনাদের হাতে তুলে নিতে পারবেন তখনই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘কোরবানির পর থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ৬০ টাকা কেজির পেঁয়াজ দেখতে দেখতে ৭০ টাকা, ৮০ টাকা, ১০০ টাকা হয়ে এখন ১৪০ টাকা। কোথাও কোথাও তারচেয়েও বেশি দাম হাঁকানো হচ্ছে। আপেলের চেয়ে পেঁয়াজের দাম বেশি হয়ে গেছে- এটা তো মশকরা করারই কথা, মশকরা তো হবেই। মশকরা করে অনেকেই বলছে যে, এত দাম দিয়ে খাওয়ার কি দরকার? তাহলে কাল ডিমের দাম বেড়ে গেলে ডিম খাবেন না, তেলের দাম বেড়ে গেলে তেল খাবেন না, চালের দাম বেড়ে গেলে চাল খাবেন না। এর চেয়ে সহজ পন্থা পৃথিবীতে আর কিছু আছে?’

আমির খসরু আরও বলেন, ‘দেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণকে কোনও তোয়াক্কা না করেই এসব কাজ করা হচ্ছে। সরকারের মনোভাব হচ্ছে এরকম- ‘আমি কিংবা আমরা (সরকার) জনগণের তোয়াক্কা করি না, তোমাদের ভোটের দরকার নেই, একরাত ভোট ডাকাতি করলেই পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা যায়’। যাদের জনগণের কাছে কোনও জবাবদিহিতা নেই যারা জনগণের মালিকানা নিয়ে তামাশা করছে তাদের কাছে কে পেঁয়াজ খেতে পারলো আর কে পারল না- এটা নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই।’

জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুন রায় চৌধুরী, সাবিরা নাজমুল মুন্নি, তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদল নেতা এম জাহাঙ্গীর আলম, সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক শামিম ভূইয়া প্রমুখ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *