চট্টগ্রামের রাউজানের প্রত্যন্ত এলাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে আমনের। বিস্তৃত ফসলী জমিতে দোল খাচ্ছে হলদে বর্ণের আমন ফসল। ইতিমধ্যেই উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে ফসল ঘরে তোলার কাজ। বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফিরেছে হাসির আভা।
সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য বারের চাইতে এবার আমনের ফলন আশানুরুপ ভালো হয়েছে।
রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়রন শাখা) সঞ্জিব কুমার সুশীল ২৪ গন্টা ডট নিউজের প্রতিবেদককে বলেন, চলতি আমন মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৭৬ হেক্টর। এর বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৮০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৪ হেক্টর বেশী চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে উপশী জাতের ১১ হাজার ২১০, হাইব্রিড জাতের ৮০ হেক্টর, ও স্থানীয় জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০হাজার মেক্টিকটন শুকনা ধান উৎপাদন হতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনকূলে থাকায় এবারের মৌসুমে আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া উপজেরা কৃষি অফিস মাঠপর্যায়ে প্রান্তিক চাষীদের নানান পরামর্শ ও সেবা দেওয়ায় মাঠে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ ছিল অন্যান্য বারের চেয়ে তুলনামূলক কম। ফলে বাম্পার ফলন দেখা গেছে আমন ক্ষেতে।
উপজেলার পাহাড়তলী, বাগোয়ান, কদলপুর, নোয়াপাড়া, সুলতানপুর, হলদিয়া, পশ্চিম গুজরা, উরকিরচর, গহিরা, নোয়াজিশপুর, চিকদাইরছাড়াও রাউজার পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কৃষি জমিতে হলদে বর্ণের আমনের দোল খাওয়ার দৃশ্য কৃষকদের মাঝে ফিরে এনেছে স্বস্তি। অনেক ইউনিয়নে আগেভাগেই শুরু হয়েছে আমন ফসল কাটার ধূম। মান্ধাতা আমলের ধান মাড়াইয়ের দৃশ্যও চোখে পড়ছে অনেক স্থানে। পাশাপাশি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় উপজেলার কৃষকরা ধান মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র ব্যাবহার করে অল্প সময়ে মাঠের ধান মাড়াই করে ঘরে তুলছে।
আমনের মৌসুম শুরু হওয়ায় বাজারে কামলার উপস্থিতি বেড়ে গেছে। মৌসুমী কামলাদের ভীড় দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। ভোলা, নোয়াখালী, সন্দীপ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, বাশঁখালীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে কামলারা ছুটে আসছে রাউজানসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায়। অতীতের তুলনায় কামলাদের মজুরীও খুব বেশী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে অনেক কৃষক। একেকজন কাজের লোকের দৈনিক মজুরি ৫০০-৬০০ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রান্তিক জনপদের কৃষকরা মোবাইলে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে কৃষি বিষয়ক নানান সেবা গ্রহন করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে এবার উপজেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।
Leave a Reply