রেকর্ডময় খেলায় রাজশাহীকে হারাল বরিশাল

রান বন্যা ও রেকর্ডময় এক ম্যাচ দেখলো বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ। নাজমুল হোসেন শান্তর ঝড়ো সেঞ্চুরিতে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী আগে ব্যাটিং করে সংগ্রহ করে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ২২০ রান। পারভেজ হোসেন ইমনের সেঞ্চুরিতে ম্যাচটি ৮ উইকেটে নিজেদের করে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল। এই ম্যাচে হ্যাটট্রিকও করেছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি।

বরিশালের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে রাজশাহী। উত্তরবঙ্গের দলটির পক্ষে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন নাজমুল হাসান শান্ত ও আনিসুল ইসলাম ইমন। টুর্নামেন্টে পাওয়ারপ্লেতে সর্বোচ্চ ৬৪ রানের রেকর্ড গড়েন এই দুইজন। তবে সে রেকর্ড পরের ইনিংসেই ভেঙে দেয় বরিশাল।

উদ্বোধনী জুটিতে ১৩১ রান তোলেন ইমন ও শান্ত। ৩৯ বলে ৬৯ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নেন ইমন। সুমন খানের শিকার হওয়ার আগে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান হাঁকান ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা। তার স্ট্রাইকরেট ছিল ১৭৬.৯২!

রনি তালুকদার ১২ বলে ১৮ রান করে সুমনের এক উড়ন্ত ফিরতি ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন। পরের বলেই রান আউট হয়ে ফেরেন শেখ মেহেদী হাসান। তবে তাতে রাজশাহীর রান তোলায় মোটেও ভাটা পড়েনি। বরং সময়ের সাথে রান তোলার গতি বাড়িয়েছেন শান্ত।

একপ্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরি তুলে নেন রাজশাহীর অধিনায়ক। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে এটিই প্রথম সেঞ্চুরি। ৫২ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন শান্ত। চলতি বছরে ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারেই এটা তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি।

শান্তর ১০৯ রানের টর্নেডো ইনিংস শেষ হয় কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে তামিমের তালুবন্দী হয়ে। তার ৫৫ বলের ইনিংসে মোট ৪টি চার ও ১১টি ছক্কা ছিল।

শেষ ওভারে নুরুল হাসান সোহান, শান্ত ও ফরহাদ রেজার টানা উইকেটে হ্যাটট্রিকের দেখা পান কামরুল ইসলাম রাব্বি। চতুর্থ বাংলাদেশি বোলার হিসাবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়লেন এই পেসার। এক বল পরের মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের উইকেটসহ শেষ ওভারে মোট ৪টি উইকেট পান তিনি।

নির্ধারিত ২০ ওভারে রাজশাহী পায় ২২০ রানের সংগ্রহ। যা টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

বরিশালও উড়ন্ত শুরু পায় সাইফ হাসান ও তামিম ইকবালের ব্যাটে। পাওয়ারপ্লেতে আগের ইনিংসের রেকর্ড ভেঙে ৬৭ রান সংগ্রহ করে বরিশাল। উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়া সাইফ হাসান ২টি করে চার ও ছক্কায় ১৫ বলে ২৭ রান করে সাইফউদ্দিনের শিকারে পরিণত হন। তারপরে বরিশালকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন।

৩৪ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম। অপরপ্রান্তে ২৫ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন পারভেজ। অর্ধশতক পূর্ণ করার পরে ইমনের রান তোলার গতি আরও বৃদ্ধি পায়। তবে রান আউট হয়ে যান তামিম। ৩৭ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৫৩ রান করেন তিনি। ইমন ও তামিমের জুটি হয়েছিল ৫৩ বলে ১১৭ রানের।

তামিম ফেরার পরে আফিফ হোসেন ধ্রুবকে সাথে নিয়ে বাকি কাজটা সম্পূর্ণ করেন পারভেজ। মাত্র ৪২ বলে সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি, যা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম। পারভেজের ম্যাচজয়ী ইনিংসটিতে ছিল ৯টি চার ও ৭টি ছক্কা। আফিফ অপরাজিত থাকেন ১৬ বলে ২৬ রানে।

১১ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের বড় জয় পায় বরিশাল। এই হারে টানা ৫টি ম্যাচ হারলো রাজশাহী। অপরদিকে টানা তিন ম্যাচ হারের পরে জয় পেল বরিশাল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ২২০/৭ (২০ ওভার)
শান্ত ১০৯, ইমন ৬৯;
রাব্বি ৪/৪৩, সুমন ২/৪৩।

ফরচুন বরিশাল ২২১/২ (১৮.১ ওভার)
পারভেজ ১০০*, তামিম ৫৩,
সাইফ ১/৪০।

ফরচুন বরিশাল ৮ উইকেটে জয়ী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *