অবহেলায় শ্রী হারাচ্ছে চট্টগ্রামের মোমবাতি পাহাড় নামে পরিচিতি পাওয়া বিজয় স্তম্ভটি!

চট্টগ্রামে সংস্কারের অভাবে অযত্নে অবহেলায় পড়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় স্তম্ভটি। এতে বিজয়ের প্রতীকটির দিন দিন সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। বিজয় স্তম্ভটি দেখতে মোমবাতির মতো হওয়াতে অনেকের কাছে এটি মোমবাতির পাহাড় নামে পরিচিতি। ২২৭ টি সিড়ি বেয়ে ওঠতে হয় এই বিজয় স্তম্ভটিতে।

জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীদের প্রতিহত করতে কালুরঘাট ব্রিজের নিচ থেকে অপারেশন চালানো হতো। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করার পর এর স্মৃতি স্মারক হিসেবে তৎকালীন চসিক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী একটি বিজয় স্তম্ভ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কালুরঘাট ব্রিজের নিচে বিজয় স্তম্ভ নির্মাণ সম্ভব হচ্ছিলো না। তাই ১৯৯৫ সালে নগরীর বাটালি হিল মতিঝর্ণায় সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৩৫০ ফিট ওপরে ৭১ ফিটের এই বিজয় স্তম্ভটি নির্মাণ করেছিলেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এটির সার্বিক দেখভালের দায়িত্বে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বিজয় স্তম্ভটির নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে দশজন আনসার সদস্য। তিনজন ইলেকট্রিশিয়ান পালাক্রমে দায়িত্বপালন করছে। স্তম্ভটিতে যাওয়ার রাস্তাটি ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। আসা যাওয়ার সিঁড়িগুলোও অনেকাংশে ভেঙে গেছে। করোনার কারণে সেখানে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।

বুধবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে দায়িত্বরত ইলেকট্রিশিয়ান আনোয়ার হোসেন বলেন, এককানি জায়গার ওপর ১৯৯৪ সালে এই বিজয় স্তম্ভটির নিমার্ণ কাজ শুরু করেন তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৯৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় স্তম্ভটি উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানে ডিউটি করছেন জানিয়ে আনোয়ার বলেন, বিজয় স্তম্ভটি বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আলোকায়ন করা হয়।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন এই স্তম্ভটি সংস্কার কাজ হচ্ছে না। আমরা বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সংস্কারের বিষয়ে জানিয়েছি। উনারা সংস্কার করেননি। পাহাড়লটির চূড়ার মাটি ভেঙে পড়াতে ঝূঁকিপূর্ণ হয়েছে স্তম্ভটি।

কিভাবে যাবেন?-নগরীর টাইগারপাস হয়ে আমবাগানের রাস্তা দিয়ে একটু হেটে গেলে নেভি কনভেনশন এর শেষ মাথায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নতুন কার্যালয়ের সাইন বোর্ড দেখবেন। ওই সড়কের প্রবেশ করতেই বামের নতুন রাস্তা দিয়ে কিছুটা গেলেই মোমবাতি পাহাড়ে উঠার পথ পেয়ে যাবেন। বস্তিঘরের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। বস্তির শেষ মাথায় পেয়ে যাবেন সিঁড়ি। সিঁড়ি বেয়ে উঠলেই বাটালি পাহাড়/মোমবাতি পাহাড়/মুক্তিযুদ্ধের বিজয় স্তম্ভ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *