শনিবার জানা যাবে খাগড়াছড়ি পৌর নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী কে? কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন কিনেছেন তিনজন

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ব্যাপক কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। এরিমধ্যে খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে সরকারি দলের জন্য জেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত তিন প্রার্থী কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তাঁরা হলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, বর্তমান মেয়র মো: রফিকুল আলম, এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল।

জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সা: সম্পাদক এড. আশুতোষ চাকমা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা না করলেও রামগড় ও মাটিরাঙা পৌরসভার জন্যও আগাম প্রার্থী তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। ঢাকায় নমিনেশন বোর্ড চুড়ান্ত একজনের নাম ঘোষণা করবেন।

জেলা আওয়ামীলীগের একটি সূত্র জানিয়েছেন, রামগড়ের জন্য পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল আলম কামাল, বর্তমান মেয়র কাজী রিপন ও পৌর আওয়ামীলীগের সা: সম্পাদক আব্দুল কাদেরের নাম পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে।

একইভাবে মাটিরাঙার জন্য বর্তমান মেয়র মো: শামছুল হক, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হুমায়ুন মোরশেদ খান এবং তবলছড়ির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভূইয়া’র নাম।

তবে সংক্ষিপ্ত প্রার্থী তালিকায় খাগড়াছড়ি ও রামগড় পৌরসভায় বর্তমান দুই মেয়র মো: রফিকুল আলম ও কাজী রিপন এবং মাটিরাঙায় আবুল কাশেম ভূইয়ার নাম প্রেরণ নিয়ে তিনটি পৌরসভাতেই সরকারি দলের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

খাগড়াছড়ি পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি জাবেদ হোসেন এবং রামগড় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তফা হোসেন জানান, যাঁরা দলের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেও দলের সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন। নিজেদের স্বার্থে অহেতুক দলের নেতাকর্মীদের হামলা-মামলার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন, তাঁরা দলের মনোনয়ন পেলে অতীতের মতো আবারও একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন।

জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মনির হোসেন খান মনে করেন, দলের ঐক্য-শৃঙ্খলার জন্য হুমকি হবেন; এমন প্রার্থীকে সাধারণ নেতাকর্মীরা মন থেকে ভালোভাবে গ্রহণ করবেন না। তাই যাঁরা মনোনয়ন পাবেন, তাঁদেরকে অবশ্যই সম্মান-ভালোবাসার মাধ্যমে নেতাকর্মীদের মন জয় করতে হবে।

তরুণ রাজনীতিক ও মেয়র প্রার্থী পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল জানান, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিশেবে ছোটকাল থেকে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনায় যদি ‘নৌকা’র প্রার্থী হতে পারেন, তাহলে পৌর এলাকার উন্নয়ন-কর্মসংস্থান-নাগরিক সেবা এবং আর্থ-সামাজিকতার ক্ষেত্রে কোন বৈষম্য করা হবে না।

টানা দুই মেয়াদের সমালোচিত-প্রশংসিত মেয়র মো: রফিকুল আলম ‘নৌকা’ প্রতীক পাবার আগ্রহের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি সকলকে নিয়েই এগোতে চাই। অতীতের ভুলভ্রান্তি পেছনে ফেলে সমৃদ্ধ খাগড়াছড়ি পৌর এলাকা গড়তে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত নেতাদের সহযোগিতা চেয়েছি।

জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী জানিয়েছেন, সম্ভাব্য প্রার্থী জীবনবৃত্তান্ত এবং বিগত দিনের কমকান্ডের বিশদ বিবরণসহ প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। দলের প্রধান অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী ক্ষতিক কর্মকান্ডে জড়িতদের বিষয়ে অবগত আছেন। যেহেতু আমি নিজেও একজন প্রার্থী তাই দল যাকে নমিনেশন দেবেন তার পক্ষে সবাই মিলে কাজ করতে হবে।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এবং প্রতিমন্ত্রী পদ-মর্যাদায় শরণার্থী টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি জানান, আমরা কেন্দ্রের নির্দেশনা ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক জেলা আওয়াশীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভার মাধ্যমেই সংক্ষিপ্ত তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করেছি। মনোনয়ন দেয়ার চূড়ান্ত দায়িত্ব কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের। তবে কেউ যদি ব্যক্তি ও প্রার্থী হিশেবে নিজেকে দলের চেয়ে শক্তিশালী ভাবেন, তাহলে চরম ভুল হবে। দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা অতীতেও দলের শৃঙ্খলা বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রত্যাখান করেছে।

২৪ ঘণ্টা/প্রদীপ চৌধুরী

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *