নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণচেষ্টাসহ দুই মামলায় ইউপি সদস্যসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার দুই মামলায় প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন প্রকাশ দেলুসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এ সময় গ্রেফতার দুই আসামি রহমত উল্যা ও মাইন উদ্দিন শাহেদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ১৪ জনের মধ্যে চারজন এখনও পলাতক রয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।

অভিযুক্ত আসামিরা হলো- মামা বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন দেলু (২৬), জামাল উদ্দিন প্রকাশ প্রবাসী জামাল (৫২), নূর হোসেন বাদল (২২), আব্দুর রহিম (২০), মোহম্মদ আলী প্রকাশ আবুল কালাম (২৩), শামসুদ্দিন সুমন প্রকাশ কন্ট্রাক্টর সুমন (৩২), ইস্রাফিল হোসেন মিয়া (২১), মাইন উদ্দিন সাজু (২১), নূর হোসেন রাসেল (২৯), আনোয়ার হোসেন সোহাগ (২৪), আবদুর রব চৌধুরী প্রকাশ লম্বা চৌধুরী (৫০), মোস্তাফিজুর রহমান প্রকাশ আরিফ (১৯), মিজানুর রহমান প্রকাশ তারেক (২০), মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ প্রকাশ সোহাগ মেম্বার (৪৫)।

পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ১০০ নম্বর পাতায় ধর্ষণ ও ৩৩২ নম্বর পাতায় নির্যাতন মামলায় ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক উৎপল চৌধুরীর কাছে জমা দেয়া হেয়েছে। পলাতক চার আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দু’টি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও নোয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী তদারকি করেন। পরবর্তীতে ধর্ষণ মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল মোস্তফা ও নির্যাতন মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারীকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।

ধর্ষণ মামলার দুই আসামি ও নির্যাতন মামলায় ওই দুজনসহ ১০ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আট আসামি। এখনো পর্যন্ত পলাতক রয়েছে চার আসামি; তারা হলো- জামাল উদ্দিন, আবদুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ ও মিজানুর রহমান তারেক।

প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে এসে তাদের ঘরে ঢুকেন।

বিষয়টি দেখে ফেলেন স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার।

রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে পরপুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজ ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করে।

একপর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে।

৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় তথা দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *