৫৫ বছর পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেল রুট চালু

দীর্ঘ ৫৫ বছর পর আবারও চালু হলো নীলফামারীর চিলাহাটির সঙ্গে ভারতের হলদিবাড়ীর রেল রুট। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয় এই রেল যোগাযোগ।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সে এই রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবন থেকে শেখ হাসিনা এবং নয়াদিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

চিলাহাটিতে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারতে এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম ছিল চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুট।

১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে এই রেল রুটটি বন্ধ হওয়ার আগে এ পথে দার্জিলিং থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত নিয়মিত যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করতো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ও ভারত সরকার দুই দেশের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ার রেল রুটগুলো পুনরায় চালুর উদ্যোগের অংশ হিসেবে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেল যোগাযোগ সচল হয়।

চিলাহাটি-হলদিবাড়ীর রেল রুট চালুর ফলে আবারও এ পথে বাংলাদেশ থেকে নেপাল, ভুটান ও ভারতের সেভেন সিস্টারখ্যাত (অরুণাচল, আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরা) রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। এটি ঢাকা থেকে ভারতের দার্জিলিং যাওয়ার অন্যতম প্রধান রুটে পরিণত হবে।

পাকশি বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে চিলাহাটি থেকে হলদিবাড়ি পর্যন্ত রেল রুট ছিল। কিন্তু যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তা বন্ধ হয়ে যায়। ১৮৭৪ থেকে ১৮৭৯ সালের মধ্যে সাড়া থেকে (পাকশীর কাছে) চিলাহাটি পর্যন্ত মিটারগেজ এবং দামুকদিয়া (সাড়ার উল্টো দিকে) থেকে পোড়াদহ পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হয়। ১৯০৯ সালে পোড়াদহ থেকে ভেড়ামারা পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইনকে ডাবল লাইনে রূপান্তর করা হয়। ১৯১৫ সালের জানুয়ারিতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালুর মধ্যে দিয়ে দর্শনা থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত সরাসরি রেল সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৪ সালে সান্তাহার থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত এবং ১৯২৬ সালে পার্বতীপুর থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত মিটারগেজ রেললাইন ব্রডগেজে রূপান্তর করা হয়। এ সময়ে শিয়ালদহ ও শিলিগুড়ির মধ্যে সান্তাহার-পার্বতীপুর হয়ে দার্জিলিং এক্সপ্রেস ও নর্থবেঙ্গল এক্সপ্রেস নামে দ্রুতগতির ট্রেন চালু হয়। রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ রুট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হতো।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *