খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী রফিকুল আলম

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : আগামী ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন, বর্তমান মেয়র মো: রফিকুল আলম।

এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর (শুক্রবার) রাতে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড দলের মেয়র প্রার্থী হিশেবে জেলা আওয়ামীলীগের সা: সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী’র নাম ঘোষণা করা হয়।

এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমান মেয়রের বিদ্রোহী প্রার্থী হবার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। কেন্দ্রের কাছে জেলা আওয়ামীলীগের প্রেরিত প্রস্তাবিত প্রার্থী তালিকায় মেয়র রফিকের নামও ছিল।

মেয়র রফিকুল আলম নিজেই শনিবার বিকেলে টেলিফোনে সাংবাদিকদের কাছে মেয়র প্রার্থী হবার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ‘আগামীকাল(২০ ডিসেম্বর) রোববার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করবো।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য মো: রফিকুল আলম জানান, তিনি জেলা আওয়ামীলীগের কাছে দলীয় মনেনানয়ন পেতে আবেদন করেননি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ডেকে নিয়ে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্যানেলে নাম দিয়েছিলেন। তাই তিনি, দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন মাত্র। পৌরবাসীদের অনুরোধে অতীতের মত এবারও তিনি নাগরিক কমিটির ব্যানারেই এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করবেন।

পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: জাবেদ হোসেন জানান, রফিকুল আলম দলের মনোনয়ন পাবার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা-তদবির করেছেন। তাঁর বড়োভাই জাহেদুল আলম এবং ছোট ভাই দিদারুল আলমকে জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি’র কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েছেন। কেন্দ্র থেকে দলের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। বিভিন্ন টিভিতে নিজের মনোনয়ন পাবার বিষয়ে দাম্ভিকতা প্রকাশ করেছেন।

আওয়ামীলীগ নেতা জাবেদ দাবি করেন, চূড়ান্ত মনোনয়ন না পেয়ে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সা: সম্পাদক এম. এ. জব্বার জানান, মো: রফিকুল আলম জেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটির অন্যতম নির্বাহী সদস্য। গত ৫ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি সদরসহ জেলার তিন পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মেয়র পদে দলীয় প্রার্থীর প্যানেল তৈরী করতে বিশেষ বর্ধিত হয়েছে। ঐ সভায় খাগড়াছড়ি সদর পৌরসভায় মেয়র পদে ৭ জনের নাম প্রস্তাব আসে। পরে ঐ প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, বর্তমান পৌরসভার মেয়র মো: রফিকুল আলম ও জেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েলের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

জেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম সহ-সভাপতি মনির হোসেন খান জানান, অতীতের দুটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী হেরে গেলেও এবার সে সুযোগ নেই। জেলা আওয়ামীলীগের সা: সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী প্রার্থী যথেষ্ট যোগ্য এবং জাতি-ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। তাঁকে জিতিয়ে আনতে দলের সব স্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ।

আওয়ামীলীগের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামীলীগের সা: সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, যে কারো প্রার্থী হবার অধিকার রয়েছে। আমিও দেশের প্রাচীনতম একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী। যে দল মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে, যে দল পদ্মা সেতু বানিয়েছে; আমি সে দলেরই প্রার্থী।

তিনি দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন, আমি বিশ্বাস করি; শান্তি ও সহাবস্থানের স্বার্থে পৌর এলাকার সম্মানিত ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকাল ৪টাঢ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ মনোনয়ন চুড়ান্ত হয়।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) খাগড়াছড়িতে রিটার্নি অফিসারের কাছে প্রার্থীরা মনোনয়পত্র জমা দেবেন।

২৪ ঘণ্টা/প্রদীপ চৌধুরী

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *