বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আজীবন অটল থাকবে: সীতাকুণ্ডে ভারতীয় হাই কমিশনার

কামরুল ইসলাম দুলু : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ভারতীয় সৈন্যদের আত্মত্যাগের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীদের স্বরণে “মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র”নামে নির্মিত ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে ৩০ লাখ টাকা ব্যায়ে এটি নির্মান করা হয়।

আজ মঙ্গলবার(২২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত অনেকাংশে সহযোগীতা করেছে। যার ফলে মুক্তিবাহিনীর সাথে ভারতেও অনেক সৈন্য শহীদ হন। বাংলাদেশ ভারত বন্ধুত্বের সম্পর্ক আজীবন অটল থাকবে।

অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক গৃহায়ন ও গণপূত মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং যুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি, স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ.সালাম, জেলা পরিষদ সদস্য আ.ম.ম দিলসাদ, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযুদ্ধা বদিউল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়, এএসপি (সীতাকুণ্ড সার্কেল) আসরাফুল করিম, ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা, উপজলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল বাকের ভুঁইয়াসহ রাষ্ট্রীয় অতিথিবৃন্দ, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান,বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১২ই ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট দারোগারহাট থেকে কুমিরা এলাকায় ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সম্মুখ যুদ্ধের প্রস্ততি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং দেশ প্রেমিক জনসাধারণের সহযোগিতায় ঐ দিন রাত ১০টা থেকে পাক হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমন পরিচালনা করেন। এই সম্মুখ যুদ্ধ ১২ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত হয়ে ১৭ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড পাক হানাদার মুক্ত হয়। বীরত্বপূর্ণ এই যুদ্ধে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী অসংখ্য সদস্য শহীদ হন। সীতাকুণ্ড সদরে চন্দ্রনাথ মন্দিরগামী এলাকায় মিত্রবাহিনীর পঞ্চাশের অধিক শহীদ জওয়ানের মরদেহ দাহ করা হয় এবং মুক্তিবাহিনীর শহীদদের বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় দাফন করা হয়। উপজেলার ছোট দারোগারহাট থেকে কুমিরা পর্যন্ত শহীদদের স্বরণে ইতিমধ্যে কুমিরা মহাসড়কের পাশে দৃষ্টিনন্দন স্মৃতি ৭১ নামে কয়েকটি ভাস্কর্য দিয়ে স্বরণ করেছেন।

এরই অংশ হিসেবে ভারতীয় মিত্র বাহিনীদের সম্মান জানাতে প্রথমে পৌরসদর গজারিয়া ডিঘীর পাড়ে তৎকালীন ভারতীয় সহকারি হাই কমিশনার ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ.সালাম এই মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র নামে ভাস্কর্যটি ভিত্তি প্রস্থর করেন। কিন্তু ঐ স্থানে পরবর্তীতে জেলা পরিষদের নিয়োগকৃত ঠিকাদার কাজ করতে গেলে আপত্তি আসে। এরপর দীর্ঘ এক বছর কাজ বন্ধ থাকার পর একাধিক মতবিনিময় করে বর্তমান স্থান মন্দির সড়ক দুই নং ব্রীজ সংলগ্ন সীতা মন্দিরের পাশে উপরে সড়কের পাশে নির্মাণ করা হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *