পটিয়ায় অপহৃত গাড়ি চালক মোসলেম উদ্ধার হয়নি ১১ মাসেও,সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন স্ত্রী-সন্তানরা

পটিয়া উপজেলার হাইদদগাঁও ইউনিয়নের সাতগাছিয়া দরবার শরীফ এলাকা থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে গাড়ি চালক মোসলেম উদ্দিনকে অপহরণ করে এক দল দুর্বৃত্ত গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি। অপহরণের পরে রাতে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা নিয়ে নির্দিষ্টস্থানে গেলেও অপহরণকারীদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পুলিশ ৫জনকে গ্রেফতার করলে তারা আদালতে ১৬৪ ধরায় জবানবন্দি দেয়। এরপরও তাকে পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি গত ১১ মাসেও।

শুক্রবার (১ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অপহ্নত মোসলেমের স্ত্রী ফরিদা আক্তার।

তিনি বলেন, দুই পুত্র সন্তান নিয়ে স্বামীর সন্ধান চেয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। বরং পুলিশ প্রশাসন আশস্ত করার চেয়ে ধমক দিচ্ছে।

অপহৃত গাড়ি চালক মোসলেম উদ্দিন (৪৫)চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রাম বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোসলেমের ছোট ভাই নাঈমুর রহমান বলেন, পটিয়া উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও এটিআর এগ্রো ফার্মের পাশ থেকে আলমগীর আলম নামের একব্যক্তি লাকড়ি ক্রয় করে কয়েক দিন ধরে শ্রমিক দিয়ে পিকআপ ভর্তি করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যান। কিন্তু গত ২১ ফেব্রুয়ারি ৯টায় শ্রমিকরা লাকড়ি আনতে গেলে গাড়ি চালক মোসলেম উদ্দিনকে একদল সন্ত্রাসী অপহরণ করে নিয়ে যায়।

তিনি জানান, পরে তাকে উদ্ধারের জন্য পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ মোহাম্মদ সাইফুল উদ্দিন প্রকাশ বালু সাইফু(৩৫), মো. মুছাকে (২৭), মোহাম্মদ নয়ন (৩২), আব্দুর রহিম ও মোহাম্মদ আজিম নামের পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। তারা বিভিন্ন সময় আদালতে অপহরণের কথা স্বীকার করে ১৬৪ দেয়।

নাঈমুর রহমান দাবি করেছেন, আসামিদের স্বীকারোক্তিতে আব্দুর শুক্কুর ও শাহাব উদ্দিন প্রকাশ মিয়ার নাম আসলেও তারা প্রভাবশী হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।

পটিয়া থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বোরহান উদ্দিনের অসযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মোসলেমকে উদ্ধারের বিষয়ে জানতে থানায় গেলে ওসি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন। তিনি হুমকি দিয়ে থানা থেকে আমাদের তাড়িয়ে দেন।

অপহৃতের স্ত্রী ফরিদা আক্তার বলেন, ছোট ছোট দুটি সন্তান তাদের পিতার আসার পথ চেয়ে থাকে। সংসারের একমাত্র উপর্যক্রম মানুষটিকে অপহরণের পর প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে ঘুরতে এখন নিঃস্ব, অসহায়।

তিনি, তার স্বামীর অপহরণের মামলাটি পটিয়া থানা থেকে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *