একজন সহকারী শিক্ষককে চাকুরীচ্যুত করে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিলেন অধ্যক্ষ। সে সাথে এ ব্যাপারে আর কোন তথ্য সাংবাদিকদের দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলারও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুর সানফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজে।
জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের স্বনামধন্য ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সানফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। বিশেষ করে সভাপতি কর্তৃক অনিমতান্ত্রিকভাবে শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক তদন্ত পূর্বক সে অনিয়ম ধরা পরার পরও তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ না নেওয়া, কিন্ডারগার্টেন শাখায় দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর যাবত পরিচালনা কমিটির কোন মিটিং না করেই সভাপতি আমিনুল হক একক আধিপত্য বিস্তার করে যা ইচ্ছে তাই ভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এবং আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, অধ্যক্ষ পরিচয় দিলেও সিনিয়র প্রভাষক হিসেবে বেতন উত্তোলন করাসহ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষকের অনুপস্থিতির দিনগুলোতেও বেতন প্রদান, একজন সহকারী শিক্ষক এখানে ক্লাস না নিয়ে স্থানীয় একটি কলেজে গিয়ে ক্লাস করান। অথচ বেতন ভাতা ঠিকই স্কুল থেকে নিচ্ছেন।
এমন অনেক বিষয়ে নিয়মিত সংবাদ প্রকাশের জের ধরে এসব সংবাদ প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানকারী হিসেবে সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান কে সন্দেহ করে তার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলকভাবে দোষ চাপিয়ে এমন হুমকি প্রদান করেন অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান জুয়েল।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, সাংবাদিককে কে বা কারা তথ্য দিয়েছেন তা আমার জানা নেই। অহেতুক সন্দেহবশত তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছেন। আমি সিনিয়র সহকারী শিক্ষক। অধ্যক্ষ কোন কাজে বাইরে গেলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করার কথা আমার। কিন্তু অধ্যক্ষ অন্যান্য অনিয়মের মতই এক্ষেত্রেও অনিয়ম করে আমার জুনিয়র শিক্ষককে দায়িত্ব দেন। এধরণের বিভিন্ন অনিয়ম করে চলেছেন অধ্যক্ষ। এ নিয়ে কখনই আমি কোন কথা বলেনি অথচ এ নিয়ে মিথ্যে অভিযোগ এনে চাকুরীচ্যুত করাসহ স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওযা হচ্ছে। এমনকি আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এতে আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তিনি বলেন, অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান আজ সকালে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে বলেন, আপনি হাজিরা খাতার ছবি তুলেছেন। লতিফ আর রেজাউল কোথায় স্বাক্ষর করে বা করেনা আপনি সেগুলো ছবি তুলে সাংবাদিককে সরবরাহ করেছেন। যা প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর। এসময় তার কথার প্রতিবাদ করলে তিনি উপরোক্ত হুমকি প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে জানার জন্য অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমানের মুঠোফোন ০১৭১৭০১২২৯৫ নম্বরে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সানফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন জানান, আমি এ বিষয়ে এখনই কিছু জানিনা। তবে সহকারী শিক্ষক অভিযোগ দিলে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply