পঞ্চম দিনে গড়ালো বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম টেস্ট। জয়ের জন্য শেষ দিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন আর ৭টি উইকেট। অপরদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ২৮৫ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে মুমিনুল হক সেঞ্চুরি ও বল হাতে মেহেদী হাসান মিরাজ ৩টি উইকেট নিয়েছেন।
৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য সামনে নিয়ে ব্যাটিং করতে নেমে দেখেশুনেই শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল উদ্বোধনী জুটিতে তুলে ফেলেন ৩৯ রান। বাংলাদেশ যখন উইকেটের জন্য দিশেহারা হয়ে পড়েছিল তখনই আক্রমণে এসে ব্রেক এসে থ্রু এনে দেন মিরাজ। ৫০ বলে ২৩ রান করা ক্যাম্পবেলকে ফেলেন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে।
এরমধ্যে অধিনায়ক মুমিনুল ফিল্ডিংয়ে বেশ আকমণাত্মক হয়ে ওঠেন। আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং ও পরিকল্পনামাফিক বোলিংয়ের ফলস্বরূপ মিরাজের বলে ব্রাথওয়েটকে সিলি পয়েন্টে মুঠোবন্দী করেন বদলি ফিল্ডার ইয়াসির আলি। ৪৮ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় খাতায় আরও ১১ রান যোগ হতেই আরেকটি উইকেট শিকার করেন মিরাজ। এই অফস্পিনারের তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন শেইন মোসলে।
আর কোনো বিপদ ছাড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে দিন শেষ করেন কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমাহ বনার। বনার ১৫ ও মেয়ার্স ৩৭ রানে অপরাজিত আছেন। তাদের জুটি অবিচ্ছিন্ন ৫১ রানে। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন এখনো ২৮৫ রান।
তার আগে তৃতীয় দিন শুরু করেছিলেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। মুশফিক আরও ৮ রান যোগ করতেই রাহকীম কর্নওয়ালের শিকার হয়ে ফেরেন। তবে একপ্রান্ত আগলে অর্ধশতকের পরে শতকও তুলে নেন মুমিনুল। ৮৩ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছিলেন মুমিনুল। ফিরে এসে দ্রুতই তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটা তার দশম সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের পক্ষে যা সর্বোচ্চ।
আরেক প্রান্ত লিটন দাসও তুলে নেন অর্ধশতক। ৬৯ রান করে জোমেল ওয়ারিকানের শিকার হন তিনি। এটি তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ অর্ধশতক। কাইল মেয়ার্সের তালুবন্দী হওয়ার আগে ম্যাচের প্রথম শতরানের জুটি গড়ে ফেলেন মুমিনুলের সাথে। জুটি গড়েন ২১১ বলে ১৩৩ রানের। লিটনের ইনিংসে ছিল ৫টি চার।
লিটনের বিদায়ের পরে মাঠে নামেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মিরাজ। সেঞ্চুরি হাঁকানোর পরে মারমুখী হয়ে ওঠেন মুমিনুল। দ্রুত রান তোলা যে তার লক্ষ্য তা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল। ফলে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সীমানারক্ষী কেমার রোচের তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার আগে করেন ১১৫ রান।
মিরাজ ও তাইজুলও দ্রুত রান তোলার প্রবণতা দেখান। তবে দুইজনই ওয়ারিকানের শিকার হন। মিরাজ আউট হওয়ার পরেই বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করে দেয়, ৮ উইকেটে ২২৩ রানে।
চতুর্থ দিনেও মাঠে নামতে পারেননি সাকিব আল হাসান। দিনের শেষের দিকে ফিল্ডিংয়ের সময় হাত ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম ইকবালও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ৪৩০/৭ (১ম ইনিংস)
মিরাজ ১০৩, সাকিব ৬৮, সাদমান ৫৯, লিটন ৩৮, মুশফিক ৩৮, মুমিনুল ২৬, শান্ত ২৫, নাঈম ২৪, তামিম ৯;
ওয়ারিকান ৪/১৩৩, কর্নওয়াল ২/১১৪, বনার ১/১৬, রোচ ১/৬০, গ্যাব্রিয়েল ১/৬৯।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৯/১০ (৯৬.১ ওভার)
ব্রাথওয়েট ৭৬, ব্ল্যাকউড ৬৮, জসুয়া ৪২, মেয়ার্স ৪০, বনার ১৭, জসুয়া ১২*;
মিরাজ ৪/৫৮, মুস্তাফিজ ২/৪৬, নাঈম ২/৫৪, তাইজুল ২/৮৪।
বাংলাদেশ ২২৩/৮ (৬৭.৫ ওভার- ইনিংস ঘোষণা)
মুমিনুল ১১৫, লিটন ৬৯, মুশফিক ১৮, সাদমান ৫, তামিম ০, শান্ত ০;
ওয়ারিকান ৩/৫৭, কর্নওয়াল ৩/৮১, গ্যাব্রিয়েল ২/৩৭।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১১০/৩ (.৪০ ওভার)
মেয়ার্স ৩৭*, বনার ১৫*, ক্যাম্পবেল ২৩, ব্রাথওয়েট ২০;
মিরাজ ৩/৫২।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য ৩৯৫ রান।
Leave a Reply