চসিকের অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে ২৩ মার্চ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত এবারের অমর একুশে বই মেলা নগরীর কাজীর দেউড়ি স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম চত্বরে শুরু হবে ২৩ মার্চ মঙ্গলবার।

মেলায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কোন প্রকাশনা সংস্থাকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হবে না। বই মেলার আয়োজক কমিটি ঠিক করবে কারা আলোচক থাকবেন। প্রকৃত লেখক,কথাসাহিত্যিক,কবি, গবেষকদের পুরস্কৃত করবে বই মেলা কমিটি।

আগামীকাল ৩ মার্চ (বুধবার) কর্পোরেশনের টাইগারপাস অফিসে সিটি মেয়রের নেতেৃত্বে বই মেলা কমিটি পুনঃগঠনে বসবে লেখক প্রকাশকগণ।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে কর্পোরেশনের আন্দরকিল্লাস্থ পুরনো নগর ভবনের কে বি আব্দুস সাত্তার মিলনায়তনে বই মেলা উপলক্ষে আয়োজিত মনবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো.রেজাউল করিম চৌধুরী এসব তথ্য জানান। সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে মেলার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এই মেলা আয়োজক হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শুধুমাত্র পৃষ্ঠপোষকতা দেবে। যাবতীয় সব কাজ করবে চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদ ও মেলা কমিটি। এবারের মেলায় অতীতের ভুল-ভ্রান্তি সংশোধন করে ঢাকার বাছাই করা প্রকাশকদের অংশগ্রহনের সুযোগ দেয়া হবে। যাতে মেলার গুণগত মান বৃদ্ধি পায়।

সভায় মুক্তিযোদ্ধা, গবেষক ও প্রকাশক ডা. মাহফুজুর রহমান, প্রকাশক জামাল উদ্দীন, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের শাহ আলম নীপু, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ,কবি ওমর কায়সার উপন্যাসিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, প্রধান শিক্ষ কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।

এতে সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার,সাংস্কৃতিক সংগঠক শুক লাল দাশ, আব্দুল হালিম দোভাষ, অঞ্চল চৌধুরী, অধ্যাপক গোফরান টিটু, নজরুল ইসলাম মোস্তাফিজ, সাইফুদ্দিন সাকী, সাইফুল আলম বাবু, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার প্রমুখ মত প্রকাশ করেন।

ছড়াকার মোদ্দাচ্ছের আলী, কবি সেলিনা শেলী, নাজিম উদ্দিন শ্যামল, শামসুল হক সহ লেখক প্রকাশকরা মেলায় যাতে কোনভাবেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোন অপশক্তি স্টল বরাদ্দ না পায়, মেলায় যাতে প্রকৃত লেখকদের যাচাই বাছাই করে পুরস্কৃত করা হয়, স্টলের পরিমান কমিয়ে পরিধি বাড়িয়ে ঢাকার বাছাইকৃত নামী প্রকাশকদের সমাগম ঘটানা,আলোচনা অনুষ্ঠানের আলোচক নির্ধারণ ও সাস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে যাতে প্রকৃত সাংস্কৃতিক সংগঠন দিয়ে আয়োজন করা যায় তা নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান ২৬ মার্চের পূর্বে নগরীর সকল অফিস আদালত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ডের নামফলক ইংরেজির পরিবর্তে বাংলায় চালু করতে মেয়রকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহিতুল আলম  এবারের একুশে পদক প্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, গত বছরের বাংলা একাডেমি পদক প্রাপ্ত রাশেদ রউফ, কাউন্সিলর শহিদুল আলম, নেছার আহমেদ মঞ্জু , নাজমুল হক ডিউক, পুলক খাস্তগীর, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু।

সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আরো বলেন, গতবারের বই মেলায় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী প্রকাশনা সংস্থা ঢুকলো কিভাবে ! এবার যদি এরকম হয় তাহলে সাথে সাথে স্টল বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করি। চেতনা আবেগের বিষয়, ধারণ করা যায়। চেতনা ইতিহাস নয় যে লিখা যাবে। অতীতে যা হয়েছে তা বলে আর লাভ নাই। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের বই মেলায় ভুল ত্রুটি সংশোধন করে এগুতো হবে। যাতে এই মেলার সৃজনশীলতা ফুটে উঠে । কোন মৌলবাদী গোষ্ঠীকে স্টল বরাদ্দ দিতে কেউ হুমকি ধমকি দিলে মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে দমানো যাবে না। যেভাবে ঢাকার অমর একুশে বই মেলায় প্রফেসর ড, হুমায়ুন আজাদকে হত্যা করেও মুক্তমত প্রকাশকে দমানো যায়নি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *