পাখি সুরক্ষার নামে সংগঠন থাকলেও সুফল নেই সৈয়দপুরে অবাধে চলছে পাখি শিকার-নিধনযজ্ঞ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবাধে চলছে পাখি শিকার। পাখির অভয়ারণ্য গড়া, জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর নামে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সুবিধা নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠন থাকলেও তাদের কার্যক্রমে বিন্দুমাত্র থামেনি পাখি শিকার বা নিধন।

‘এসো আমরা পাখি বাঁচাই, প্রকৃতি বাঁচাই’ শ্লোগান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত সেতুবন্ধন নামে সংগঠনটির কার্যক্রম দিবস কেন্দ্রিক ও অফিসিয়াল পর্যায়ে হলেও সাধারণের মাঝে এর ন্যুনতম প্রভাব নেই।

কারণ তারা সংগঠনের নামে বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের অজুহাতে অর্থ নিলেও তার কার্যকরী বাস্তবায়ন ঘটায়নি মাঠ পর্যায়ে। মাঝে মাঝে লোক দেখানো নানা প্রোগ্রাম করলেও সেগুলোতে তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণের সম্পৃক্ততা না থাকায় প্রোগ্রামের নামে প্রশাসনিক ব্যক্তিদের ভোজন বিলাশ হলেও কাঙ্খিত লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সফলতা আসেনি।

সে সাথে সংগঠনটিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করে নিজের আখের গুছিয়েছে সেতুবন্ধনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচয়দানকারী আলমগীর হোসেন।

পরিবেশ, পাখি ও সমাজ উন্নয়নের কথা বলে আলমগীর হোসেন স্থানীয় বিভিন্ন এনজিও ও সরকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিবর্গসহ দেশের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে তা দিয়ে নিজের বাড়ি, আদালতে বিচারাধিন অন্যের জমিতে পাঠাগার স্থাপন করাসহ ব্যক্তিগত নানা সম্পদ গড়েছে। এমনকি যাদের সহযোগিতায় সেতুবন্ধন প্রতিষ্ঠা লাভ করে সেই সকল প্রাথমিক পর্যায়ের যুবকদের পরবর্তীতে বিভিন্ন কৌশলে সরিয়ে দিয়ে নিজের ইচ্ছেমত সংগঠন পরিচালনা করছেন।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেতুবন্ধনের প্রতিষ্ঠাকালীন অনেকেই বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিলেও আলমগীর কর্তৃপক্ষের তোষামোদি করে বিষয়টি নিজের পক্ষে নিয়ে সুবিধা ভোগ করছেন। এমনকি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সেতুবন্ধনের নামে যুব সংগঠন করে সরকারী বরাদ্দ নিয়ে পকেটস্থ করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তারা আরও জানান, মাঝে মাঝে গ্রামে গঞ্জে পাখি শিকারের মাধ্যমে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার নামে শো ডাউন করা হলেও আলমগীরের কাছে নিয়মিত পাখি শিকারী বা শিকারের জন্য লাইসেন্স প্রাপ্ত বন্দুকধারীর কোন তথ্য নেই এবং তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না। নেই এ বিষয়ে কোন গবেষণা বা অনুসন্ধানী তৎপরতা। শুধু আই ওয়াশ কিছু লিফলেট বিতরণ, কলসী স্থাপন, আগে থেকেই অভয়ারণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত স্থানগুলোতে ব্যানার টাঙ্গিয়ে এবং অসুস্থ পাখির পরিচর্যা করার নাটক সাজিয়ে, চিত্র প্রদর্শনী করে কৃতিত্ব জাহির করেন। এর মধ্যেই যেন তাদের কার্যক্রম সীমাবন্ধ। ফলে গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ মানুষ ও শহরের সৌখিন পাখি শিকারীদের মধ্যে এ ব্যাপারে সামান্যতম সচেতনতা সৃষ্টি হয়নি।

এরূপ নানা কারণে পাখি সুরক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠিত সংগঠন সেতুবন্ধন আজ নাম মাত্র সংগঠনে পরিণত হয়েছে। পাখি শিকার বা নিধন প্রতিরোধে সংগঠনটির কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না থাকায় দিন দিন পাখি শিকার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সংগঠনটি এখন নামকাওয়াস্তে পাখি আলমগীর সংগঠন হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।

এ ব্যাপারে পাখি আলমগীরের সাথে কথা হলে বলেন, সৈয়দপুরে কতজন পাখি শিকারী আছে তা জানা নেই। তবে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে একজন থাকতে পারে। অন্যান্য অভিযোগের বিষয় সে এড়িয়ে যায় এবং প্রশাসনিক ব্যক্তিরা তার সাথে আছে তাই এ নিয়ে সংবাদ করলেও তার কিছুই হবেনা মর্মে অহমিকা প্রকাশ করেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *