মিয়ানমার থেকে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও মানব পাচার ও চোরাচালান রোধে প্রয়োজনে সীমান্তে গুলি চালানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি। গতকাল মঙ্গলবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভারত সরকারের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স হন্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে সকল ধরনের চোরাচালান বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। মায়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি না জালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিলো।
কিন্তু অবৈধ কর্মকান্ডে বন্ধে এখন থেকে গুলি চালানো হবে। তাহলেই মানব, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান বন্ধ হবে। তবে এবিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান ড. একে আব্দুল মোমেন। এম্বুলেন্স হন্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দ্বোরাইস্বামী সহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এ সময় অতিথিরা অ্যাম্বুলেন্সের চাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট হন্তান্তর করেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ রোহিঙ্গা এসেছিল। আলোচনার মাধ্যমে মায়ানমার সরকার তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়। ১৯৯২ সালে এসেছিল ২ লাখ ৫৩ হাজার। এর মধ্যে ফিওে গেছে ২ লাখ ৩৬ হাজার। বাকিদেও আশ্রয় দেয় ইউএনএইচসিআর’র। এবারের সংখ্যা অনেক বেশি। ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। এদেরকে তাদেও দেশে ফিরিয়ে দিতে আমরা কাজ করছি। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন এজেন্সি এদেরকে এখানে দীর্ঘমেয়াদে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। চার বছর ধরে রাখাইনে কোন মারামারি নেই। শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। কিন্তু ওরা রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার কথা বলে না। উল্টো এখানে কিভাবে তাদেরকে ভাল রাখা যায়, তাদের হিউম্যান রাইটস- এসব অবান্তর কথা বলছে। তারা বলছে, রোহিঙ্গাদের জমির অধিকার দিতে, চাকরিতে বৈষম্য না করতে। তারা আমাদেরকে শর্ত দিতে চায়। আসল কথা হচ্ছে, রোহিঙ্গারা এখানে দীর্ঘদিন থাকলে তাদের চাকুরিও দীর্ঘায়িত হবে। এদের জন্য অনেকে অর্থ বরাদ্দ দেন, কিন্তু সে টাকা কিভাবে খরচ হয় সেটাও আমরা জানি না। রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লা খুন হওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে ছেলেটা মারা গেছে সে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে কাজ করছিল। সে রোহিঙ্গাদেও বোঝানোর চেষ্টা করছিল, এখানে নয়, তাদের সুন্দর ভবিষ্যত তাদেও দেশেই। তাই তাদেরকে রাখাইনে ফিরে যেতে হবে। এই আন্দোলন করতে গিয়েই তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মুহিবুল্লাহ’র হত্যা রহস্য উন্মোচন ও হত্যাকারী চিহ্নিত হোক। হত্যাকারীদের শাস্তি হোক।
Leave a Reply