‘শিশুদের ক্ষতি, বিভাজনে উসকানি ও গণতন্ত্রকে দুর্বল করে ফেসবুক’

ফেসবুকের সাবেক পণ্য ব্যবস্থাপক ফ্রান্সেস হাউজেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের সামনে বলেছেন, ‘ফেসবুকের বিভিন্ন সাইট ও অ্যাপ শিশুদের ক্ষতি করে, কোম্পানিটি সমাজে বিভাজন উসকে দেয় এবং আমাদের গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়।’ ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে মার্কিন কংগ্রেসে শুনানিতে অংশ নিয়ে এসব অভিযোগ তোলেন এই হুইসেলব্লোয়ার। বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার কংগ্রেসের সাব-কমিটির সামনে শুনানিতে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান ফ্রান্সেস হাউজেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ৩৭ বছর বয়সী এই নারীর বিস্তর অভিযোগের পর নড়েচড়ে বসেছে সবাই।

শুনানির শুরুতে হাউজেন বলেন, ‘আমি আজ এখানে এসেছি, কারণ আমি বিশ্বাস করি, ফেসবুকের পণ্যগুলো শিশুদের ক্ষতি করে, বিভাজন উসকে দেয় এবং আমাদের গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়।’

ফ্রান্সেস হাউজেন বলেন, কোম্পানিটির ঊর্ধ্বতনরা ঠিকই জানেন, কীভাবে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামকে নিরাপদ করা যায়। কিন্তু তারা সেই প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো আনবেন না, কারণ মানুষের চেয়ে মুনাফায় নজর তাদের। এখানে কংগ্রেসীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া তারা এই সংকটের সমাধান হবে না।’

‘ঝুঁকি নিয়ে হলেও’ সামনে এগিয়ে এসেছেন উল্লেখ করে ওই নারী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এখনও পদক্ষেপ নেওয়ার সময় আছে। তবে এখনই কিছু একটা করতে হবে।’

অন্যদিকে, ফেসবুকের কর্নধার মার্ক জাকারবার্গ বলছেন, এসব অভিযোগে কোম্পানির ভুল চিত্র দাঁড় করানো হয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ প্ল্যাটফর্মটিতে ক্ষতিকর কন্টেন্টের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কর্মীদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে জাকারবার্গ বলেছেন, ‘নিরাপত্তা, সুস্থতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলোতে আমরা গভীরভাবে নজর দিয়ে কাজ করি।’

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানি ফেসবুকের প্রতি মাসের হিসাবে ২০৭ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে বলে জানা যায়। কোম্পানিটির মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেরও কোটি কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যবহারকারীদের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় এবং ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি থামাতে কোম্পানিটি যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয় না বলে অভিযোগ উঠে আসছে।

এন-কে

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *