পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় রেলওয়ের গেটম্যানকে মারধরের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার আজিজের বিরুদ্ধে জিআরপি থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ মামলার এজাহার গ্রহণ করে এফআইআর করতে আদালতের অনুমতি চেয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি এলাকায় (গেট নং টি/১০, কি.মি ২৪৭/৫-৬) দায়িত্ব পালন করছিলেন রেলওয়ের অস্থায়ী গেটকিপার মো. সিপরাত হোসেন। এ সময় বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন আসার সংকেত পেয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে ছয়সূতি-কুলিয়ারচরের মধ্যবর্তী গেটে ব্যারিয়ার ফেলেন তিনি। এতে সড়কে সাময়িক সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আটকা পড়ে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বহনকারী গাড়িটিও। এ সময় গাড়িচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গেটকিপারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আজিজ গাড়ি থেকে নেমে গেটকিপারকে গালিগালাজ ও বেধড়ক মারধর করেন।
বিষয়টি ওই দিনই গেটকিপার মো. সিফরাত হোসেন রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে জানান। পরদিন কিশোরগঞ্জ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) আনিসুজ্জামান ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশকে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এ দিকে গত ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ রেলওয়ের কেন্দ্রীয় বিভাগীয় প্রকৌশলী/২ মো. সুলতান আলী ভৈরব জিআরপি থানায় একটি মামলার অভিযোগ দাখিল করেন। এতে ‘রেলওয়ে অ্যাক্ট ১৮৮০ অনুসারে জননিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মচারীকে মারধরের ঘটনা গুরুতর অপরাধ’ উল্লেখ করে মামলা গ্রহণপূর্বক বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ভৈরব অফিসের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী জিসান দত্ত জানান, একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তিনি গেটম্যানকে গালিগালাজ ও মারধর করতে পারেন না। ঘটনার দিন ইউএনও যাওয়ার জন্য গেটটি খুললে যদি ট্রেন দুর্ঘটনা হতো তবে এর দায়িত্ব তিনি নিতেন না। ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর আমি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। পরে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেলওয়ে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়।
ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস মামলার এজাহার পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি যেহেতু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে, তাই মামলা এফআইআর করার জন্য কিশোরগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (সিজেএম) কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আজিজ বলেন, ট্রেন তখনও অনেক দূরে ছিল। তাই গেট খুলে দেয়ার কথা বললে গেটকিপার আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। তবে গেটম্যানকে মারধর ও গালিগালাজের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
Leave a Reply