সড়ক দুর্ঘটনা : ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দেওয়া হল না এএসআই রিংকনের

নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান প্রতিনিধি : কর্মস্থল থেকে গত ১১ নভেম্বর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানের পূর্ব গুজরা ইউনিয়নে ছুটে এসেছিল পুলিশের সহকারি উপ পরিদর্শক (এএসআই) রিংকন বড়ুয়া। তিনদিন পরিবারের সাথে মেতেছিলেন চঞ্চলতায়।

তিনদিনের ছুটি শেষে গত ১৩ নভেম্বর বুধবার বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন নিজ কর্মস্থল কুমিল্লার চাঁন্দপুরের কচুয়া থানায়। কিন্ত বিধিবাম! কর্মস্থলে পৌঁছার পূর্বেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন টগবগে এই তরুণ পুলিশ কর্মকর্তার।

নিহত রিংকন রাউজান উপজেলার ১০ নং পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বৃহত্তর হোঁয়ারাপাড়ার ছাদাংগরখীল গ্রামের মাহালদরের বাড়ির মৃত আশুতোষ বড়ুয়ার কনিষ্ট পুত্র। বড় ভাই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আবুধাবি প্রবাসী। ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে আসেন ভাই মিটু বড়ুয়া।

নিহতের প্রতিবেশী বাপ্পী কুমার বড়ুয়া ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, ছুটি শেষে বুধবার নিজ কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশ্যে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দেন রিংকন। কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার পূর্বেই এক বন্ধুর বাসায় উঠেছিল সে।

সেখান থেকে বন্ধুর মোটর বাইকে করে যাওয়ার পথেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লায় মোটরসাইকেলটিকে একটি ট্রাক লরি পেছন থেকে ধাক্কা দিলেই ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান রিংকন। তবে এই দূর্ঘটনায় রিংকনের বন্ধুটি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। রাতেই তার মৃত্যু সংবাদটি পরিবারের সদস্যদের ফোনে জানান নিজ কর্মস্থল থেকে কেউ একজন।

এ সময় ছেলে হারানোর শোকে মা কাকলি বড়ুয়ার বিলাপে বাড়িতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতাড়না হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে স্বজনদের কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। বিকেল তিনটার দিকে স্থানীয় পূর্বরাম বিহারের মাঠ প্রাঙ্গনে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান শেষে তার লাশের সৎকার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রিংকন ছোট বেলা থেকেই ছিল সাদাসিধে স্বভাবের। ভালো ছেলে হিসেবে এলাকায় ডাকনাম ছিল তার। এস.এস সি পাশ করার পর ২০১০ সালেই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিণীতে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। ২০১৭ সালে সহকারি উপ-পরিদর্শক পদে পদোন্নতির পর কুমিল্লার চাঁন্দপুর থানায় দায়িত্বরত ছিলেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *