সৈয়দপুরে পুরাতন পেঁয়াজের কেজি ২২০ টাকা নতুন পেঁয়াজপাতা সাড়ে ৩শ’ টাকা পাল্লা

নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে পেঁয়াজের কেজি শুক্রবারের বাজারে ২২০ টাকা কেজিতে এসে দাঁড়িয়েছে। সে সাথে নতুন পেঁয়াজপাতা বিক্রি হচ্ছে ৫ কেজির পাল্লা সাড়ে ৩ শ’ টাকায়।

১৫ নভেম্বর শুক্রবার সকালে সৈয়দপুর শহরের সবজি আড়তে গিয়ে দেখা যায় পুরাতন পেঁয়াজের বেশ মুজদ রয়েছে। পাশাপাশি নতুন পেঁয়াজ তথা পাতাসহ পেঁয়াজের আমদানি হয়েছে ব্যাপকভাবে। কিন্ত তারপরও কমেনি পেঁয়াজের দাম। বরং দুই দিন আগের ২ শ’ টাকা কেজির স্থলে বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে। এর সাথে নতুন মৌসুমের পাতাওয়ালা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি হিসেবে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ৩৫০ টাকায়।

নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় অধিকাংশ ক্রেতাই সেই পেঁয়াজই কিনছে। তবে পাতার পরিমান বেশি এবং পেঁয়াজ গুটি ছোট থাকায় একেবারে পেঁয়াজ নির্ভর খাদ্যপন্য তৈরী তথা রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পুরাতন পেঁয়াজ কিনতে বাধ্য হচ্ছে ক্রেতারা। দাম না কমার কারণে রেকর্ড দাম ২২০ টাকা কেজি দরেই পেয়াজ কেনা-বেচা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে একজন পেঁয়াজ বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পুরাতন পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে দাম সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠার আশংকা রয়েছে বলে জানান তিনি।

অন্য এক ব্যবসায়ী অবশ্য ভিন্ন মত প্রকাশ করে বলেছেন, নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করায় এ সম্পাহের মধ্যেই পুরাতন পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। তবে তিনি জানান, নতুন পেঁয়াজ যে হারে বাজারে আসছে তার চেয়ে অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে বাজারে। পাশাপাশি নতুন পেঁয়াজ আসা মাত্রই তা ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে ট্রাকে করে পাঠিয়ে দিচ্ছে। একারণে নতুন পেয়াজ উঠলেও পেয়াজের দাম কমছেনা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সৈয়দপুরের বাইরে পেঁয়াজ পাঠালে এখানকার বাজার দর কমবে।

এসময় ক্রেতারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে এবার যে পরিস্থিতি দাঁড় করানো হয়েছে তা সরকারের ব্যর্থতার প্রকাশ। বিশেষ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বাজার মনিটরিং বা তদারকি করেননি। তাই চাহিদার সাথে মজুদের চরম হেরফের সৃষ্টি হয়েছে। যা তার অদূরদর্শীতার খেসারত। যার ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাদের।

সৈয়দপুর পাইকারী সবজি বাজারের আড়ৎদাররা দাম বাড়ার কারণ হিসেবে জানান, পাবনা ও কুষ্টিয়ার পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়া বেশি দামে আমদানী করতে হচ্ছে। তাছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে সম্প্রতি বুলবুল এর আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ায় সেখান থেকে পেয়াজ আসছেনা।

বৃহস্পতিবার সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম গোলাম কিবরিয়া পাইকারী বাজারগুলোতে গেলে আড়ৎদাররা কোথা থেকে পেঁয়াজ আমদানী করা হয়েছে এ সংক্রান্ত চালান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ওজনে কম দেওয়া এবং অতিরিক্ত দামে বিক্রির জন্য জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও বৃহস্পতিবারের তুলনায় প্রায় ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে প্রতি কেজি পেয়াজের।

সৈয়দপুর সবজিবাজার পাইকারী ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, আমদানী করার ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং বা হাতে হাতে টাকা প্রদানসহ চালান ছাড়াই নেয়ার শর্তে ব্যবসা করতে হচ্ছে। তা না হলে যে পরিমান পেঁয়াজ আনা সম্ভব হয়েছে তার সিংহভাগই আনা যেত না। তাহলে পেঁয়াজের দাম আরও অনেক বেশি হতো।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *