মুত্তাকী বনে সমাজে ভালো কাজ করে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (দ.) এর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে : তাহের শাহ

নেজাম উদ্দিন রানা,রাউজান (চট্টগ্রাম) : রাউজান সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণকালের বৃহত্তম রাহমাতুল্লিল আলামিন সুন্নি কনফারেন্সে রাসুলে পাক (দ.) এর ৪১ তম বংশধর, রাহনুমায়ে শরীয়ত তরিক্বত, গাউছে জামান, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মা.জি.আ.) হুজুর কিবলা বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অল্প সময়ের জন্য মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাই এ সময়কে আখেরাতের জন্য কাজে লাগিয়ে মুত্তাকী বনে সমাজে ভালো কাজ করে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (দ.) এর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেহ এবং প্রাণ খুব অল্প সময়ের জন্য একত্রিত আছে। আর এই সংক্ষিপ্ত সময়টিই এবাদত বন্দেগীর একমাত্র সুযোগ। যা কবরে হাশরে আর ফিরে পাওয়া যাবেনা। এ জন্য নিজেদেরকে মন্দ লোক থেকে রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি দ্বীনি খেদমত করা অতিব জরুরি।

হুজুর কেবলা আরও বলেন, তাওবার মাধ্যমে জীবনের সকল পাপ মোচন হয়ে যায় বটে, কিন্তু জালেম ও অপরের হক্ব ধ্বংসকারী, আত্মসাতকারীরা কোন পার পাবেনা। যতক্ষণ না তিনি মাজলুমের কাছে ক্ষমা না চাইবে কিংবা হক্ব আদায় না করবে। তাই তিনি নব দীক্ষিতদেরকে নির্দেশ দেন যেন সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে কিংবা হক্ব পরিশোধ করে এ ধরনের পাপীদের পাপ মোচন করে নতুনভাবে তরিক্বত জীবন শুরু করে দুনিয়া ও আখিরাতকে উজ্জল করেন এবং দেশ সমাজ, মুসলিম মিল্লাতকে অশান্তি ও হানাহানি থেকে রক্ষা করার কাজে আত্মনিয়োজিত হন।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাউজান উপজেলা (উত্তর) গাউছিয়া কমিটি আয়োজিত রাহমাতুলল্লিল আলামিন সুন্নি কনফারেন্সে হুজুর কেবলা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজাদা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মা.জি.আ), আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ হামিদ শাহ (মা.জি.আ.)।

রাউজান উপজেলা (উত্তর) শাখা গাউসিয়া কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ইলিয়াছ নূরীর সভাপতিত্বে ও মাওলানা ইয়াসিন হোসাইন হায়দরী এবং আহসান হাবিব চৌধুরী হাসানের সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সহ-সভাপতি আলহাজ মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারী জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জয়েন্ট সেক্রেটারী আলহাজ সিরাজুল হক, আলহাজ শামসুদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন শাকের, অধ্যাপক কাজী শামসুর রহমান, গাউসিয়া কমিটির কেন্দ্রীয় পরিষদ চেয়ারম্যান পেয়ার মুহাম্মদ কমিশনার, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোনায়দে কবির সোহাগ, আরব আমিরাত গাউছিয়া কমিটির সেক্রেটারি আলহাজ জানে আলম, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুল ওহাব । মাহফিলে বক্তব্য রাখেন গাউছিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, শায়খুল হাদিস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফি, মাওলানা জসিম উদ্দিন আজহারি, অধ্যক্ষ রফিক আহমদ ওসমানী, অধ্যক্ষ মারেফাতুন নুর, মাওলানা আহমদ উল্লাহ ফোরকান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রকৌশলী নুরুল আজিম, উপজেলা আওয়ামীলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আনোয়ার ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক বশির উদ্দিন খান, রাউজান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ, তাওহিদুল আলম, ইউপি চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, বাবুল মিয়া মেম্বার, আব্দুল্লাহ আল মামুন, কাউন্সিলর জানে আলম জনি, শওকত হোসেন, আসাদ উল্লাহ, মাওলানা ইব্রাহিম নঈমী, অধ্যক্ষ আবু জাফর, শাহাজাহান ইকবাল, সৈয়দ হোসেন কোম্পানী, অধ্যক্ষ আবু মোস্তাক আল কাদেরী, কামরুল আহসান চৌধুরী, কমর উদ্দিন সবুর, হাবিব উল্লাহ মাস্টার, আবু ইউচুপ চৌধুরী, সৈয়দ মুহাম্মদ হোসেন, উপজেলা গাউসিয়া কমিটি দক্ষিণের সভাপতি আবু বক্কর সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হানিফ।

উল্লেখ্য হুজুর কেবলার আগমন উপলক্ষে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কে কনফারেন্সস্থল কলেজমাঠ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কয়েক শতাধিক তোরণ ও ফেস্টুন নির্মাণ করে আওলাদে রাসুলের প্রতি সম্মান জানান। মঞ্চে হুজুরের আসন গ্রহণ পর্ব থেকে লাখো মুসলিম জনতা নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর নারায়ে রেসালাত ইয়া রাসুলুল্লাহ (দ.) স্লোগান দিয়ে মুখরিত করে তোলে পুরো এলাকা। এদিন বাদে আসর হাজার হাজার মহিলা রাউজান আর আর এসি স্কুল মাঠে আলাদা প্যান্ডেলে অবস্থান নিয়ে হুজুরের নসিহত শুনে তাঁর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন।

মাহফিলে বক্তারা বলেন রাসুলে পাক (দ.) সমগ্র সৃষ্টি কুলের রহমত। তাই ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) সবার ঈদ। এমনকি সকল ঈদের সেরা ঈদ। জসনে জুলুছ এ সেরা নির্মল আনন্দকে আরও বেশী আকর্ষনীয় এবং হৃদয়গ্রাহী করতে করে তুলেছে। আর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বহু দেশে জসনে জুলুছেরমত ইসলামী সংস্কৃতি প্রবর্তনসহ শত শত মাদ্রাসা কায়েমের জন্য দরবারে দরবারে সিরিকোটের অবদান চির স্মরণীয় এ দরবারে কাম কর-দ্বীনকো বাচাও উপদেশটি আজ বাণী চিরন্তন হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে লিখতে হবে।

কারণ এমন নির্দেশনার প্রভাবে আজ এ সিলসিলার লাখ লাখ মুরিদ- ভক্ত দ্বীন রক্ষার মিশনকে তাদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে পালন করে যাচ্ছে বিধায় সুন্নিয়ত চর্চা আজ দেশ ব্যাপী আব্যাহত রয়েছে।

শুধু তসবিহ নয়, বরং সেবাই আসল তরিক্বত। আর দ্বীনের সেবা তথা ঈমান – আক্বিদার সেবা হল সব সেবার উর্ধ্বে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *