কাজাখস্তানে নিহত বেড়ে ১৬৪, গ্রেফতার ৫ হাজার

কাজাখস্তানে সম্প্রতি হওয়া গণ বিক্ষোভে সরকারি দমন-পীড়নে ও সহিংসতায় কমপক্ষে ১৬৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সেইসঙ্গে প্রায় ৬ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

২০ হাজার দস্যু আলমাতিতে আক্রমণ করেছিল উল্লেখ করে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্কতা ছাড়াই দেখামাত্র গুলি চালাতে আদেশ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ত তোকায়েভ। যার প্রেক্ষিতে তখন ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।

কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় বলেছে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি নাগরিকসহ প্রায় ৬ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বিশাল দাঙ্গায় পরিণত হয়। যাতে শতাধিক বাণিজ্যিক স্থাপনা, বিপণী কেন্দ্র ও ব্যাংক আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ৪০০ যানবাহন ধ্বংসের শিকার হয়।

গত ২ জানুয়ারি থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। বর্তমান সরকারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বিক্ষোভকারীরা। গত সপ্তাহে শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য রাশিয়ার সেনাবাহিনী কাজাখস্তানে পাঠানো হয়েছিল। তবে প্রেসিডেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে। সৈন্যরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং কৌশলগত অবস্থান নিয়ে পাহারা দিচ্ছে।

এদিকে, কাজাখস্তানে জরুরি অবস্থা এবং দেশব্যাপী কারফিউ বহাল রয়েছে। বিবিসির সাংবাদিক স্টিভ রোজেনবার্গ বলছেন, রাজধানী আলমাতিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শহরের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সহিংসতা কাজাখস্তানের শাসক অভিজাতদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের সঙ্গে যুক্ত বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

প্রধান শহর আলমাতিতে সহিংসতায় প্রায় ১০৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, তারা শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করার সময় আলমাটিতে দাঙ্গাবাজদের হত্যা করেছে এবং বিক্ষোভকারীরা শহরের পুলিশ স্টেশনগুলো নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিল।

রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন প্রেসিডেন্টের নির্দেশের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, শুট-টু-কিল অর্ডার ভুল এবং তা প্রত্যাহার করা উচিত। কাজাখ প্রেসিডেন্ট কেন রাশিয়ার কাছে সেনা পাঠানোর অনুরোধ করেছিল- তাও জানতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

কাজাখ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির সাবেক গোয়েন্দা প্রধান করিম মাসিমভকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু না জানালেও ম্যাসিমভের দুই সাবেক ডেপুটি মারাত ওসিপভ ও দৌলেট এরগোজিনকে নিজ নিজ পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তবে প্রকাশ্যে বরখাস্তের কারণ জানাতে পারেনি প্রেসিডেন্টর কার্যালয়।

এন-কে

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *