অবশেষে টিসিবির পেঁয়াজ চট্টগ্রামে : ৪৫ টাকা কেজিতে নগরীর ৬ স্থানে বিক্রি

২৪ ঘন্টা চট্টগ্রাম ডেস্ক : বেশকিছুদিন ধরে পেঁয়াজের দামে উদ্ধগতি থেকে যখন কিছুটা দাম কমতে শুরু করেছে ঠিক তখনই চট্টগ্রামের মানুষ টিসিবির পেঁয়াজের দেখা পেয়েছে।

এর আগে ঢাকার মানুষ বিভিন্ন স্পটে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)ও ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ সংগ্রহ করলেও চট্টগ্রামের মানুষ এ সুবিধা ভোগ করছে আজ মঙ্গলবার থেকে।

মঙ্গলবার বেলা একটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত নগরীর ৬টি স্থানে খোলাবাজারে সরকারীভাবে ন্যাযমূল্য পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে সরকারী এই প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে দুপুর থেকেই লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ সংগ্রহ করতে দেখা গেছে দামপাড়া পুলিশ লাইন, কোতোয়ালী, হালিশহর, বায়েজিদ, পাহাড়তলী ও বন্দর এলাকায়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে এক কেজি করে পেঁয়াজ কিনেছেন।

প্রথম দিনে মঙ্গলবার ৬টি ট্রাকে ১ হাজার কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি করার কথা জানিয়েছেন টিসিবির কর্মকর্তারা।

টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান জামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে নগরের ৬টি পয়েন্টে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি ট্রাকে ১ টন করে প্রথম দিন ৬টি ট্রাকে বিক্রি করা হচ্ছে। একজন সর্বোচ্চ ১ কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। তিনি বলেন এ সেবা নিয়ে আগামীকাল বুধবারও নির্ধারিত স্থানে টিসিবির ট্রাক মিযানমারের পেঁয়াজ নিয়ে হাজির হবে।

নগরীর কোতোয়ালি মোড়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর থেকে টিসিবির ট্রাক ১ টন পেঁয়াজ নিয়ে নির্দিষ্ট পয়েন্টে হাজির হয়। এ সময় কম দামে পেঁয়াজ কিনতে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ সুশৃঙ্খলভাবে পেঁয়াজ বিক্রিতে সহযোগিতা করেন।

ভিড় উপেক্ষা করেও ন্যায্যমূল্যে এক কেজি পেঁয়াজ হাতে পেয়ে মহা খুশি পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কবির। ৪২ বছর বয়সী এ ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি জানান, নাতিকে স্কুলে দিয়ে ফেরার পথে মানুষের ভিড় দেখে সামনে গিয়ে পেঁয়াজের সন্ধান পাই। মাত্র ৪৫ টাকা দামে এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে শুনে লাইনে দাড়িয়ে যায়। প্রায় ৪০ মিনিট পর কাঙ্খিত পেঁয়াজ হাতে পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে।

উনার মতই মাত্র ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনতে পেরে খুশি নিম্ন মধ্য বিত্ত নানা শ্রেণির মানুষ। তবে অনেকে টিসিবির এই উদ্যোগ দেরীতে শুরু করায় সরকারি প্রতিষ্ঠানটির সমালোচনাও করছেন।

দিদার মার্কেটের বাসিন্দা উম্মি বেগম ক্ষোভ নিয়ে বলেন, যখন পেঁয়াজের দামে হাঁফানি শুরু হয়েছে তখন প্রতিষ্ঠানটি কোথায় ছিলো? আর এখন যখন পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে তখন লোক দেখানো ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ নিয়ে হাজির টিসিবি। তিনি এসময় অপর একজনকে বলেন, এতোদিন যখন পেঁয়াজ ছাড়াই তরকারি রান্না করেছি না হয় আরো কিছুদিন এভাবেই চলুক। লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কেনার দরকার নেই।

নগরীর দামপাড়া এলাকায় দীর্ঘ এক ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে এককেজি পেঁয়াজ কিনেন রাজ্জাক হাওলাদার। তিনি খুশিমনে বলেন, অনেক দিন এক সঙ্গে এক কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করতে পারিনি দাম বাড়ার কারণে। আজ ৪৫ টাকা দিয়ে এক কেজি কিনলাম। ভালো লাগছে। তিনি বলেন, খুচরা বাজারে যখন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ছাড়িয়ে গেল, তারপর আর পেঁয়াজ কিনিনি।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বিক্রেতারা জানান, মূলত রোববার বিকেল থেকে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে, সোমবার পর্যন্ত কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫০-৮০ টাকা। সরবরাহ বৃদ্ধি আর চাহিদা কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে অভিমত ব্যবসায়ীদের।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *