চবি উপাচার্যকে হাইকোর্টের নোটিশ

চবি উপাচার্য, হাইকোর্টের, নোটিশ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারসহ চারজনকে নোটিশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও অন্য বিভাগের শিক্ষককে কেন সভাপতি রাখা হয়েছে তার ব্যাখ্যা চেয়ে এ নোটিশ দেওয়া হয়।

পাশাপাশি বিভাগের শিক্ষকদের করা রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশও দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। গতকাল রবিবার হাইকোর্টের নির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছে।

তথ্যমতে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিধি লঙ্ঘন করে অন্য বিভাগের শিক্ষককে সভাপতি রাখার অভিযোগে হাইকোর্টে রিট করেন ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন, সহকারী অধ্যাপক মৌমিতা পাল ও প্রভাষক মো. মাজহারুল ইসলাম।

এ বিষয়ে মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী বিভাগে সহকারী অধ্যাপক থাকলে তাদের মধ্যে সিনিয়র শিক্ষককে সভাপতির দায়িত্ব দিতে হবে।

আমাদের যে বর্তমান সভাপতি আছে তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার নির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ নেই।

যদি বিভাগে কোনো সহকারী অধ্যাপক না থাকে তাহলে অন্য বিভাগের সিনিয়র সহকারী অধ্যাপককে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া যায় কিন্তু কেউ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি বা নিয়োগ পেলে ওই সভাপতি পদ বাতিল হয়ে যায় ।

তিনি আরো বলেন, গত বছরের ২৪ নভেম্বর আমরা বিভাগের তিনজন শিক্ষক রেজিস্ট্রার বরাবর বিভাগের শিক্ষকদের মধ্য থেকে সভাপতি নিয়োগ দেওয়ার আবেদন করি। সেখান থেকে আমরা কোনো জবাব পাইনি। সেজন্য আমরা আদালতের দারস্থ হয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান বলেন, আমরা আনঅফিশিয়াল একটা রিট পিটিশন পেয়েছি। আমরা আইনের বাইরে যাব না। কোর্টে গিয়ে কথা বলবো ও আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য যে, চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ক্রিমিনোলজি ও পুলিশ সাইন্স বিভাগ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে।

বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন তৎকালীন উপাচার্য ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। ২০১৮ সালে তিনজন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী অবসরে গেলে বর্তমান উপাচার্য সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এরপর ২০২০ সালের ২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ.বি.এম. নাজমুল ইসলাম খানকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

এরমধ্যে গত বছরের ৩০ মে বিভাগটির দুইজন প্রভাষক হতে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বিভাগে যোগদান করে।

পরে গত বছরের ২৪ নভেম্বর সভাপতিকে মাধ্যম করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্ট ১৯৭৩ এর সংবিধির ধারা ৭ অনুযায়ী, ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে বিভাগীয় শিক্ষকদের মধ্য থেকে সভাপতির দায়িত্ব প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার নিমিত্তে একটি পত্র প্রদান করা হয়।

ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় দুইজন শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায়, নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ড. এ.বি.এম. নাজমুল ইসলাম খানকেই বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে বহাল রাখা চ.বি. এ্যাক্ট ১৯৭৩ এর সংবিধির ধারা ৭ সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট করেন ওই বিভাগের তিন শিক্ষক।

২৪ ঘন্টা/মেহেদী শান্ত/রাজীব

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *