মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন রাউজানের ভূমিহীন নাজমা

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: রিকশার প্যাডেলে পা চালিয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে রাউজানের ভূমিহীন দিনমজুর আকতার হোসেন ও নাজমা দম্পতির। রাউজান পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ছত্রপাড়ার মেয়ে নাজমার সঙ্গে পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের জানালীহাট এলাকার দিনমজুর আকতার হোসেনের বিবাহীত জীবনে একটি ভাড়া বাসা নিয়ে থাকলেও সংসারে যেখানে নুন আনতে পান্তা পুরানোর অবস্থা সেখানে বাসার ভাড়ার টাকা যোগাগ করতে হিমশিম খেতে হতো তাদের। এতদিন এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিলনা নাজমা আর আকতার দম্পত্তির। পরিবারের টানাপোড়েনের কঠিন দুঃসময়ে নাজমার দুশ্চিন্তাগ্রস্থ চেহেরায় ফিলে এলো হাসির ঝিলিক।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন গৃহহীন সকল মানুষকে দেওয়া হবে জায়গাসহ পাকা বাড়ি। তারই অংশ হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশের আইজির সার্বিক সহযোগিতায় ও রাউজান থানার ব্যাস্থাপনায় গৃহহীন তালিকায় উঠে আসে রিকশা চালক আকতার হোসেন ও নাজমা দম্পতির।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল হারুন তাঁদের জন্য রাউজান সদর ইউনিয়নের কেউটিয়া গ্রামে ক্রয় করেন দুই শতক জমি। সেই জমিতে দুইটি বেড রুম, একটি বারান্দা, রান্নাঘরসহ নির্মাণ করা হয় আধাপাকা বাড়ি। বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানসহ বৈদ্যুতিক পাখা, বাতি লাগানো হয়। ঘরের পাশে স্বাস্থ্য সম্মত শৌচাগার স্থাপন করা হয়। এছাড়া বসানো হয়েছে একটি সুপেয় পানির টিউবয়েল। গত ১০ এপ্রিল সারা দেশে পুলিশ বাহীনির সহায়তায় নির্মিত বাড়ীগুলো উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল ১১ এপ্রিল সোমবার রাউজানে রিকশা চালক আকতার হোসেন ও নাজমা দম্পতির জন্য নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল হারুন নাজমা আকতারের হাতে এসব দলিলপত্র ও চাবি হস্তান্তর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন রাউজান থানার সেকেন্ড অফিসার অজয় দেব শীল সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের সমন্বয়নে মজবুত ও টেকসই বাড়ি নির্মাণ করে নাজমা দম্পতিকে দেওয়া হয়েছে।

দৃষ্টিনন্দন বাড়ি পেয়ে খুশিতে আত্মহারা নাজমা আকতার বলেন, ঘর পেয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও রাউজান থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আজ আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আলোর মুখ দেখেছে। তিন সন্তানকে নিয়ে মাথাগোঁজার ঠাঁই পেয়েছি, এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর হতে পারেনা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *