‘বাবা কথা বলবে না, বাবা আর হাসবে না’

গতকাল মঙ্গলবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল। তাঁর মৃত্যুতে পুরো ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্ত্রী ফারহানা রূপা চৈতি যেন একেবারেই স্তব্ধ। পাঁচ বছর বয়সী একমাত্র সন্তান আর বাবাকে ফিরে পাবে না। এই নির্মম বাস্তবতার কথা বলেছেন তারকা পেসার রুবেল হোসেন।

মোশাররফ রুবেলের স্ত্রী ও সন্তানের ছবি পোস্ট করে নিজের ফেসবুকে পেসার রুবেল হোসেন লিখেছেন, ‘জীবনের নির্মম বাস্তবতা। কি নিষ্ঠুর দৃশ্য! বাবা আর কথা বলবে না। বাবা আর হাসবে না। আর কখনো দেখা হবে না। কখনোই বলবে না আয় বুকে আয়, এই ব্যথার শূন্যতা সবাই বুঝবে না, যার নেই সেই জানে পৃথিবীটা কতো কঠিন! বড় হও বাবা ভালো মানুষের মতো, তোমাকে যে অনেক উচ্চতায় যেতে হবে, তোমার জন্য অন্তর থেকে দোয়া করেছি। আল্লাহ পাক যেন রমজানের উছিলায় মোশারফ হোসেন রুবেল ভাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন আমিন।’

২০১৯ সালের মার্চে মোশাররফ রুবেলের মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে। সিঙ্গাপুরে অস্ত্রোপচার করিয়ে সেই টিউমার অপসারণও করা হয়েছিল। মোটামুটি সুস্থই হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু কয়েক বছর না যেতেই ফের দেখা দিয়েছে টিউমার। তা নিয়ে দীর্ঘ সময় লড়াই করেন তিনি।

গতকাল হুট করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রুবেলকে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

২০০৮ সালে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল রুবেলের। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মিলে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। অবশ্য অল্প কিছুদিন পর ভারতের বিদ্রোহী ক্রিকেট লিগে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তাই বেশিদিন জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাননি। আইসিএলে খেলতে যাওয়ার আগে বিসিবির কাছে অবসরের চিঠিও দিয়েছিলেন তারা।

পরে অবশ্য আবার বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফেরেন রুবেল। ২০০৯ সাল থেকে নিয়মিত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে আসছিলেন তিনি। পেয়েছেন দারুণ সব সাফল্য। ২০১৩ সালে বিপিএলের ফাইনালে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ও লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে হঠাৎ ২০১৬ সালে জাতীয় দলে ডাক পান রুবেল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ফিরে বেশ নজরও কেড়েছিলেন তিনি, তিন উইকেট নিয়েছিলেন। পরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দলেও রাখা হয় তাঁকে। এক ম্যাচ খেলে তিন ওভার বল করে কোনো উইকেট পাননি। এটিই ছিল তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। পরে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন।

এন-কে

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *