শ্রদ্ধা জানাতে কবি রবিউল হুসাইনের বাসায় প্রধানমন্ত্রী

একুশে পদকজয়ী কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তার ধানমণ্ডির বাসায় গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রায় আধাঘণ্টা উপস্থিত থেকে কবির পরিবারের খোঁজ-খবর নেন প্রধানমন্ত্রী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রবিউল হুসাইনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক।

মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৭৬ বছর বয়সী রবিউল হুসাইন।

অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তার ধানমন্ডির বাসায় আসেন। আমার কাছে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান— রবিউল হুসাইনের কী কী হয়েছিলো। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিস্তারিত জানিয়েছি।’

ডা. হারিসুল হক বলেন, ‘বুধবার প্রথমে বাংলা একাডেমি, পরে শহীদ মিনারে সর্বসাধারণর শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা জেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকাল ১১টায় একবারেই তাকে শহীদ মিনারে নেওয়া হোক।’

ডা. হারিসুল হক বলেন, ‘রবিউল হুসাইন এ প্ল্যাস্টিক অ্যানিমিয়াতে ভুগছিলেন। এটি এক ধরনের বোন ক্যানসার। এতে করে শরীরে রক্ত উৎপাদন হয় না। তার রক্ত কমে যাচ্ছিলো। ১৬ নভেম্বর রবিউল হুসাইন বিএসএমএমইউতে হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক মাসুদা বেগমের অধীনে ভর্তি হন। ১৮ নভেম্বর তার চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। বিএসএমএমইউতে ভর্তির আগে তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।’

বুধবার প্রথমে বাংলা একাডেমিতে ও পরে সকাল সাড়ে ১০টায় শ্রদ্ধা জানাতে রবিউল হুসাইনের মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে তার জানাজা হবে। বাদ জোহর মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

রবিউল হুসাইন ১৯৪৩ সালে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জন্মগ্রহণ করেন। ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন তিনি। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন রবিউল হুসাইন।

‘আরও ঊনত্রিশটি চাঁদ’, ‘কী আছে এই অন্ধকারের গভীরে’, ‘স্থিরবিন্দুর মোহন সংকট’, ‘কর্পূরের ডানাঅলা পাখি’, ‘আমগ্ন কাটাকুটি খেলা’, ‘বিষুবরেখা’, ‘দুর্দান্ত’, ‘অমনিবাস’, ‘কবিতাপুঞ্জ’, ‘স্বপ্নের সাহসী মানুষেরা’, ‘যে নদী রাত্রির’, ‘এইসব নীল অপমান’, ‘অপ্রয়োজনীয় প্রবন্ধ’, ‘দুরন্ত কিশোর’, ‘বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘গল্পগাথা’ ও ‘ছড়িয়ে দিলাম ছড়াগুলি’- রবিউল হুসাইনের রচিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *