রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যান রায়ের পরে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের (ইসলামিক স্টেট) পতাকার প্রতীক সংবলিত টুপি পরে আদালত থেকে বের হয়।
এরপর প্রিজন ভ্যানে তোলার পর দণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি জাহাঙ্গীর আলমকেও একই রকম টুপি পরতে দেখা যায়।
পুলিশি হেফাজতে থাকার পরও তারা কীভাবে এ টুপি পেল তা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা সমালোচনা। তবে পুলিশ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
রায়ে সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় দেন।
একাধিক গণমাধ্যমের ক্যামেরায় সেই বিষয়টি উঠে আসার পর নিরাপত্তার পাশাপাশি নানান প্রশ্ন সামনে এসেছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন জঙ্গিরা আইএসের প্রতীকের টুপি পেলো কোথা থেকে?
আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশকে মাথায় আইএস’র কালো পতাকা বেঁধে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করতে দেখা যায়। তিনি লিফটে ওঠার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনেই আইএসের প্রতীক চিহ্নিত কালো টুপি পরেন। এজলাসেও তার মাথায় ছিল এ টুপি।
রিগ্যানের আইএসের টুপি পরে আদালতে আসার বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। তারা দায়িত্ব এড়াতে পারে না। এ নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরাণীগঞ্জ) জেলার মাহবুবুল ইসলাম জানান, হলি আর্টিজানের মামলায় আটজন আসামিকে আমরা আদালতে পাঠানোর জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছি। এদের মধ্যে সাতজনের কাছে কিছুই ছিল না। একজনের কাছে নামাজের সাদা টুপি ছিল। আইএস’র টুপির বিষয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, সেটি আমাদেরও প্রশ্ন। টুপিটি আসলো কোথা থেকে?
‘‘আদালতের রায়ের পরও তাদেরকে আমরা রিসিভ করেছি। চেক করে তাদেরকে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়েছে, কিন্তু এমন কিছু তখনও এমন টুপি পাওয়া যায়নি।’’
মহানগর দায়রা জজের নিচতলার হাজতের দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক হারুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আসামিদের চেক করা হয়, তাদের কাছে ছুরি-চাকু বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছু আছে কি না। তাদের কাছে টুপি থাকলে, কিংবা টুপির মধ্যে কি লিখা আছে এটা বুঝা সম্ভব নয়।’
বুধবার দুপুরে রায়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণী পড়া শেষ করেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান। রায়ে ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনকে ফাঁসি এবং একজনকে খালাস দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।
Leave a Reply