১০ হাজার খালি গ্যাস সিলিন্ডারসহ আটক ৯

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবৈধভাবে এলপিজি সিলিন্ডার কেটে সেগুলো বিভিন্ন রি-রোলিং মিলে বিক্রির অভিযোগে এই চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এসময় জব্দ করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার খালি গ্যাস সিলিন্ডার।

র‍্যাব জানিয়েছে, লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় চক্রটি কম দামে গ্যাস সিলিন্ডার কিনে অবৈধভাবে সেগুলো কেটে রো-রোলিং মিলে বেশি দামে বিক্রি করত।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সীতাকুণ্ডের তুলাতুলী এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহ করে অবৈধভাবে সেগুলো কেটে বিভিন্ন রি-রোলিং মিলে বিক্রি করে আসছে। এতে এলাকার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়াসহ যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দুই দিন অভিযান চালিয়ে এই সিন্ডিকেটের মুলহোতা মো. ইসমাইল হোসেন কুসুম, মহসীন ও নুরুন নবীসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় তুলাতলী ও এর আশপাশের এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজারটি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ করা হয়। এগুলোর মধ্যে আনুমানিক দুই হাজারটি কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। অভিযানে দুইটি ট্রাকও জব্দ করা হয়েছে।

র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক বলেন, সিলিন্ডার গ্যাস বেশি ব্যবহারের জন্য কোম্পানিগুলো কম দামে গ্রাহকদের কাছে সিলিন্ডার বিক্রি করে থাকে। তবে সম্প্রতি লোহার দাম বেড়ে গেছে। সেই সুযোগে চক্রটি এলপিজি সিলিন্ডার কম দামে কিনে এনে তুলাতুলী এলাকায় কেটে বিভিন্ন রো-রিলিং মিলে বিক্রি করত। এই কাজে তারা কোনো আইন মানতো না। অথচ বিস্ফোরক আইনে বলা আছে, এসব সিলিন্ডার কাটতে বা ধ্বংস করতে হলে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমতি লাগবে।

তিনি বলেন, যদিও চক্রটির সদস্যরা দাবি করছেন তাদের কাছে যা রয়েছে, সবগুলোই খালি সিলিন্ডার। তারপরও কিছু না কিছু গ্যাস তো থাকতে পারে। যার কারণে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এখানেও ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এভাবে সিলিন্ডার কাটার কারণে এলাকার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।

এম এ ইউসুফ আরও বলেন, এলপিজির বিধানের ৯১ ধারা মোতাবেক সিলিন্ডারের আকার-আকৃতি পরিবর্তন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার বাইরে কাটা সম্পূর্ণ নিষেধ। কিন্তু আসামিরা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহ করে সেগুলো কেটে বিভিন্ন রি-রোলিং মিলে সরবরাহ করে আসছিল। এই চক্রটি এমন আরো পাঁচটি স্পটে এভাবে সিলিন্ডার কেটে বিক্রি করছে।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি প্রতিটি সিলিন্ডার ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা করে কিনে আনতো। এরপর এগুলো কেটে প্রতিটি ৭৮০ টাকা করে বিক্রি করতো। এই সিলিন্ডারের নজেল প্রতিটি বিক্রি করা হতো ১৫০ টাকা করে। অর্থাৎ প্রতিটি সিলিন্ডার থেকে লাভ ৩০০ টাকা।

তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *