সীতাকুণ্ড বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ পরবর্তী চট্টগ্রামের মানুষের মানবতা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে অগ্নিকান্ডে আহতদের চিকিৎসার খবরাখবর নিতে গিয়ে উপরোক্ত মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় সুজন বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে যেভাবে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে তা সত্যিই অনুকরণীয়। মানুষ মানুষের জন্য এ উক্তিকে স্বার্থক করে যেভাবে দল মত নির্বিশেষে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে সেটাই বাঙালি জাতীয়তাবাদ শক্তি। আর এ জাতীয়তাবাদ শক্তিকে হৃদয়ে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার দামাল ছেলেরা।
বিষ্ফোরণের সময় হাজীদের কাজে মক্কা শরীফ অবস্থান করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মারফত চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষকে হাসপাতালে ছুটে আসতে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সুজন।
তিনি বলেন, এ যেন দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ। যেভাবে রক্ত, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, খাবার, পানিসহ অন্যান্য উপকরণ নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ হাসপাতালে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তা এক কথায় অভাবনীয়। বিশেষ করে চিকিৎসক এবং নার্সরা যেভাবে অনুপ্রাণিত ভূমিকা পালন করেছে সেজন্য সকল চিকিৎসক এবং নার্সদের কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তিনি ফায়ার সার্ভিসের যে সকল সদস্য আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে জীবন দিয়েছেন তাদেরকে জাতীয় বীর ঘোষণা করার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানান।
এছাড়া যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবার যাতে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা পেতে পারে সেজন্য সরকারী দায়িত্বশীল সংস্থা এবং ডিপো কর্তৃপক্ষকে একসাথে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। যাদের অঙ্গহানি হয়েছে এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরকেও দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার আনার আহবান জানান সুজন।
নিহত এবং আহতদের পরিবারের উপযুক্ত সদস্য থাকলে তাদেরকেও চাকুরি সহায়তা প্রদান পূর্বক সম্পূর্ণ বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনা করার জন্য ডিপো কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান সুজনের।
তিনি আরো বলেন, আগুনে দগ্ধ রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা সহায়তার প্রয়োজন হয় বিধায় যারা সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য একটি কেন্দ্রীয় হিসাবে খোলারও অনুরোধ জানান তিনি।
সুজন বলেন, আগুনে দগ্ধ রোগীদেরকে সংক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রাখা একান্ত জরুরি। বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে আগুনে দগ্ধ পরবর্তী অবস্থা অত্যন্ত বিপদজনক হয়ে দেখা দেয়। এতে করে ঐ রোগীর প্রাণহানির আশংকা বহুগুণে বেড়ে যায়। তাই চিকিৎসা কেন্দ্রে অতিরিক্ত ভীড় না করার জন্য সকলের প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, পার্কভিউ হাসপাতাল করোনাকালীন সময়েও চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলো। সীতাকুন্ড ট্রাজেডিতেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মানবতার হাত প্রসারিত করেছে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি। হাসপাতালের সার্বিক ব্যবস্থাপনা দেখেও সন্তোষ প্রকাশ করেন খোরশেদ আলম সুজন।
অন্যান্যদের মধ্যে এসময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এটিএম রেজাউল করিম, পরিচালক ডা. সালেউদ্দিন এমএইচ চৌধুরী, ডা. আহমেদ রহিম, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) তালুকদার জিয়াউর রহমান, নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মো. শাহজাহান প্রমূখ।
Leave a Reply