সেন্ট লুসিয়া জুকসের বিপক্ষে ব্যাট হাতে প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে না পারলেও বোলিংয়ে দ্যুতি ছড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। ব্যক্তিগত ৪ ওভারে ২০ রান খরচ করে তার প্রাপ্তিতে মিলেছে কলিন ইনগ্রামের উইকেট। বোলারদের নৈপুণ্য প্রদর্শনের ম্যাচে বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টস জয় পেয়েছে ২৪। এর ফলে সেন্ট লুসিয়াকে বিদায় করে ‘প্লে-অফে’ জায়গা করে নিল সাকিবরা।
লো-স্কোরিং ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪১ রান করে বার্বাডোজ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বার্বাডোজের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১১৭ রানে থামে সেন্ট লুসিয়ার ইনিংস। ২৪ রানের জয়ে একম্যাচ বাকি থাকতেই ‘প্লে-অফের’ টিকিট নিশ্চিত হয় বার্বাডোজের।
অল্প পূঁজির পর বোলিং আক্রমণের শুরুতে যথারীতি সাকিবের হাতে বল তুলে দেন জেসন হোল্ডার। ইনিংসের প্রথম ওভারে আঁটসাঁট বোলিংয়ে ৩ রান খরচ করেন সাকিব। তবে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে এসে খেই হারান তিনি। দিয়ে বসেন ১২ রান। ‘পাওয়ার-প্লে’তে ২ ওভারে ১৫ রান খরচায় প্রথম স্পেল শেষ করেন সাকিব।
ম্যাচের নবম ওভারে তাকে আবারও আক্রমণে আনেন হোল্ডার। এ যাত্রায় সফলতার মুখ দেখেন প্রথম বলেই। সমান ২ চার ও ছক্কায় ২৫ রান করা কলিন ইনগ্রামকে আউট করেন তিনি। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে দলকে এনে দেন ব্রেকথ্রু। মূল্যবান উইকেট শিকারের বিপরীতে খরচ করেন মাত্র ৩ রান।
এরপর আবারও তাকে সরিয়ে নেওয়া হয় বোলিং থেকে। ব্যক্তিগত চতুর্থ ও শেষ ওভার করতে ইনিংসের ১৫তম ওভারে তৃতীয় স্পেলে আসেন বাঁ-হাতি এ স্পিনার। এ ওভারে মাত্র ২ রান (১, ০, ১, ০, ০, ০) খরচ করেন তিনি। এর ফলে ২০ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট নিয়ে নিজের কোটা শেষ করেন সাকিব।
এক ওভারে তিন উইকেট নেন ওয়ালশ।
এরপর ম্যাচের আলো নিজের দিকে নিয়ে যান হেডেন ওয়ালশ। ইনিংসের ১৭তম ওভারে তার তিন উইকেট শিকারে খেলার নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্বাডোজ। চার বলের ব্যবধানে বার্নওয়াল, ড্যারেন স্যামি, সান্তোকির উইকেট হারিয়ে প্লে-অফের স্বপ্ন ভাঙ্গে সেন্ট লুসিয়ার। ১৮তম ওভারের শেষ বলে কেসরিক উইলিয়ামসকে হ্যারি আউট করার পর সেন্ট লুসিয়ার ইনিংসে শেষ পেরেক ঠুকেন ওয়ালশ। ৮ বল বাকি থাকতেই দলীয় ১১৭ রানে অল-আউট হয় সেন্ট লুসিয়া।
বার্বাডোজের বোলারদের মধ্যে ২৬ রান খরচায় ওয়ালশ সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন। তাছাড়া হ্যারি তিনটি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে ‘বাঁচা-মরার’ ম্যাচে ব্রিজটাউনে টস ভাগ্য সহায় হয় বার্বাডোজের। সেন্ট লুসিয়া জুকসের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। অ্যালেক্স হেলস ৪ বল খেলে কোনো রান না করেই ফিরেন সাজঘরে।
ওপেনারের বিদায়ের পর তিনে ব্যাট করতে নামেন সাকিব। রাহকিম কর্নওয়ালের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে এসে রানের খাতা খুলেন তিনি। জনসন চার্লসের মারমুখী ব্যাটিংয়ের বিপরীতে কিছুটা ধীরস্থিত হয়ে খেলতে থাকেন সাকিব। নিজের প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে।
স্ট্রাইক রোটের সাথে আরও এক বাউন্ডারিতে ইনিংস বড় করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। ফাওয়াদ আলমের করা নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে কলিন ইনগ্রামের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এতে থামে তার ২১ বলে ২ চারে করা ২২ রানের ইনিংস।
বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর দ্রুত সাজঘরে ফিরেন চার্লস। ৪৭ রান করা চার্লসের বিদায়ের পর কমে আসে বার্বাডোজের রান তোলার গতিতে। জেপি ডুমিনি, রেইফার রেমন্ডরা প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে ব্যর্থ হলে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা থেকে ছিটকে যায় দলটি।
একমাত্র পরিবর্তনে বার্বাডোজ দলে এসেছিলেন জাস্টিন গ্রেভস। শেষদিকে তার ২৮ বলে করা ২৭ রানে চড়ে ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৪৩ রান করতে সক্ষম হয় দলটি।
Leave a Reply