চট্টগ্রামে দুর্নীতির শীর্ষে পাসপোর্ট অফিস

চট্টগ্রামে দুর্নীতির শীর্ষে অবস্থান করছে অতি গুরুত্বপূর্ন সেবাখাত পাসপোর্ট অফিস। এ খাতে সর্বোচ্চ ৭৯ শতাংশ ঘুষ লেনদেন হয়েছে। এর পরে রয়েছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ। এ খাতে ঘুষ লেনদেনের পরিমাণ ৬৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ । দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রামে তৃতীয়স্থানে রয়েছে বিআরটিএ। দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ এ সেবাখাতে ঘুষ লেনদেনের পরিমাণ ৬৭ দশমিক ৩১ শতাংশ।

টিআইবি’র অনুসন্ধানকালীন সময়ে হিসাব মতে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হলেও চট্টগ্রামে দুর্নীতির সবচেয়ে বড় আখড়া হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে পাসপোর্ট সেবাখাত। সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের

(টিআইবি) ‘সেবা খাতে দুর্নীতি : জাতীয় খানা জরিপ ২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।টিআইবির প্রতিবেদনে চট্টগ্রামসহ দেশের আটটি বিভাগে ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১৭ ধরনের সেবা খাতের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়।

এসব দুর্নীতির মধ্যে রয়েছে ঘুষ, জোরপূর্বক টাকা আদায়, প্রতারণা, দায়িত্বে অবহেলা, স্বজনপ্রীতি, সময়ক্ষেপণসহ বিভিন্ন হয়রানি। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে ৬৭ শতাংশ সেবাগ্রহীতা বা পরিবার দুর্নীতির শিকার হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

টিআইবির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৮৫.১১ শতাংশ মানুষ পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাজে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।

৭৭.০১ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার হয়েছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা থেকে সেবা নিতে গিয়ে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ২০২১ সালে বিভিন্ন সেবা নিতে গিয়ে প্রতিটি খানা বা পরিবারকে গড়ে ৪ হাজার ৯’শ ৪৭ টাকা করে ঘুষ দিতে হয়েছে বলে হিসাব দিয়েছে টিআইবি।

অন্যদিকে চট্টগ্রামে টিআইবির জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৫.৩২ শতাংশ উত্তরদাতা বিআরটিএতে, ৫৭.৯২ শতাংশ উত্তরদাতা বিচারিক সেবায়, ৪৯.১২ শতাংশ উত্তরদাতা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

এছাড়া চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যে ৩৬.৩১ শতাংশ, ভূমি সেবায় ৩৩.২২ শতাংশ, বিদ্যুতে ৩৩.১ শতাংশ, শিক্ষায় ৩১.২ শতাংশ, কৃষিতে ২৫.৯২ শতাংশ, কর ও শুল্কে ১৫.৮২ শতাংশ, এনজিওতে ১১.৪১ শতাংশ, গ্যাসে ৯.২২ শতাংশ,

জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহায়তায় ৮.০২ শতাংশ, ব্যাংকিং সেবায় ৪.৯১ শতাংশ এবং ৭.৭১ শতাংশ অন্যান্য ক্ষেত্রে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হওয়ার কথা বলেছেন জরিপে অংশ গ্রহণকারী উত্তরদাতারা।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই মনে করেন, ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না। তারা ঘুষ দেন মূলত হয়রানি বা ঝামেলা এড়াতে করেছেন।

টিআইবির জরিপে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন পুরুষই বেশি ৬৭.৫৬ শতাংশ। নারীর ক্ষেত্রে এই হার ৬২.৭৮ শতাংশ।

জে-আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *