চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় খাল থেকে অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের কারনে হুমকির মুখে পড়েছে খাল পাড়ের ১ হাজার ৩’শ পরিবারের ৬ হাজার মানুষ। উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট হাতিয়া, কালামিঞা পাড়া, আসাদতলী এলাকা হয়ে বয়ে যাওয়া সোনাইছড়ি খালের বহদ্দার ভিটা এলাকা থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে এসব বালু। উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের রুবেল সিকদার নামে এক ইজারাদার এসব বালু উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, বালু উত্তোলনের কারনে জলবদ্ধতা বন্ধে সরকার কর্তৃক দেড় কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সোনাইছড়ি সুইচ গেইট ও যাতায়তের জন্য ব্যবহৃত সোনাইছড়ি খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি এখন হুমকির মুখে। এছাড়া তাদের বসবাসের উপযুক্ত এলাকাটি এখন দখলবাজদের আওতায় চলে যাচ্ছে। গ্রামে বসবসরত ৫/৬ হাজার মানুষের মধ্যে অধিকাংশই কৃষি কাজে জড়িত।
কিন্তু অবৈধ বালু উত্তোলনের কারনে তাদের চাষের জমি যেমন হুমকির মুখে, তেমনি ঘরবাড়ি খালে তলিয়ে যাওয়ার পর্যায়ে।
স্থানীয়রা আরো জানান, সরকারীভাবে বালু উত্তোলনের জন্য নিলাম দিয়েছে অন্য স্থানে। কিন্তু তারা জোর পূর্বক বদ্দারভিটা এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করছে যেটি নিলামকৃত স্থান থেকে দেড় কিলোমিটার ভিতরে।
এসময় মাদার্শা ইউনিয়নের রুবেল সিকদার নামক এক ইজারাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তারা বলেন, যদি অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হয় তাহলে আমাদের শত’শত একর জমি পানিতে তলিয়ে যাবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয়দের অভিযোগটি ভিত্তিহীন দাবি করে রুবেল সিকদার বলেন, সোনাইছড়ি খাল এবং ডলু-৫ আমি ইজারা নিয়েছি। যেহেতু সোনাইছড়ি খাল পুরাটাই আমার ইজারার মধ্যে পড়ে
সুতরাং আমি বালু উত্তোলন করতেই পারি। তবে যে স্থানটি নিয়ে আপনি কথা বলছেন সেখানে বালু উত্তোলনের মিশিন বাসনো আছে ঠিকই কিন্তু পানি শূন্যতার কারনে এখনো বালু উত্তোলন করা হয়নি।
জানতে চাইলে সোনাইছড়ি সুইচ গেইটের সভাপতি নুর আহমদ বলেন, যদি বহাদ্দার ভিটা এলাকায় সুইচ গেইটের নিচ থেকে বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে সুইট গেইটটি ভেঙ্গে পড়বে। তাই সুইচ গেইট রক্ষায় এই স্থান থেকে বালু উত্তোলন না করার জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি।
জানতে চাইলে সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি শুনেছিলাম। তবে কেউ এই বিষয়ে আমাকে অভিযোগ দেয়নি। যদি সরকার স্থানটি ইজারা দিয়ে থাকে তাহলে বালু উত্তোলন করলে আমার বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই।
তবে স্থানীয়দের বিষয়টি আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে দেখতে হবে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের বহু ব্যয় প্রকল্প সøুইচ গেইট, ফসলি জমি, এবং নির্মিত একটি সেতু রক্ষার বিষয়টি নিয়ে আমি ওই স্থানে যাবো।
জানতে চাইলে সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং চিংনু মারমা বলেন, আমি গত দু’দিন আগে হোয়াটসএ্যাপে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমার তহসিলদার’কে পাঠিয়েছিলাম। তিনি স্থানীয়দের সাথে কথা বলে একটি সমাধান করে আসছিলেন।
বর্তমানে কি হয়েছে সে বিষয়ে আমি আবগত নই। তাছাড়া পরিবেশের ক্ষতি হবে, জনগণের জানমালের ক্ষতি হবে এমন কোন কাজ না করতে বলা হয়েছে। ইজারাদার যদি নির্ধারিত স্থানে বালু উত্তোলন না করে অন্য স্থান থেকে বালু উত্তোলন করে তাহলে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জে-আর
Leave a Reply