চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে অনাবৃষ্টিতে লেবু চাষে ধস

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বৃষ্টির অভাবে লেবুর ফলন তেমন ভালো হয়নি। জানা যায়, উপজেলার আমুচিয়া, জ্যৈষ্ঠপুরা ও কড়লডেঙ্গার বিপুল পরিমাণ পাহাড়ি এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য লেবুর বাগান। গত বছর লেবু চাষ করে লাভবান হওয়ায় এ বছর লেবু চাষের দিকে ঝুঁঁকেছে উপজেলার অইেশ তরুণ যুবক। এতে পিছিয়ে থাকা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে এসেছে এ জনপদে।

লেবু চাষের প্রতি এলাকার বেকার যুবকদের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও এ কাজে সরকারি সহায়তা কিংবা উপজেলা কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ পায়না বলে থাকার পরও অভিযোগ এখানকার চাষিদের। ব্যক্তিগত কিংবা বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে ধার-কর্জ নিয়েই এ অঞ্চলের প্রান্তিক চাষিরা লেবুচাষ করে থাকেন।

একদিকে বৃষ্টির অভাবে ফলন কম অন্যদিকে যে পরিমাণ লেবু উৎপাদন হয় হিমাগার বা উপযুক্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় লেবু পচন ধরে নষ্ট হয়ে যায়।

যার কারণে কম দামে লেবু বিক্রি করতে হয় বলে চাষিরা ব্যাপক আর্থিক লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। উৎপাদিত লেবু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারলে বিদেশেও রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

বোয়ালখালী উপজেলাস্থ আমুচিয়া, জ্যৈষ্ঠপুরা ও কড়লডেঙ্গা থেকে প্রতিদিন ট্রাক-পিকআপ ও বিভিন্ন যান যোগে চট্টগ্রাম সহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বড় বড় পাইকারী ও খুচরা বাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হচ্ছে।

চাষী রফিক উদ্দিন বলেন, ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে লেবুর ফুল আসতে শুরু করে আর ফলন দেয় জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র মাসজুড়ে। এছাড়াও আমুচিয়া, জ্যৈষ্ঠপুরা ও কড়লডেঙ্গা পাহাড়ে বছরের প্রায় ১২ মাসই বিভিন্ন জাতের লেবু চাষ হয়ে থাকে।

তবে জ্যৈষ্ঠ থেকে ভাদ্র এ ৪ মাসে লেবু ফলন বেশি হয়ে থাকে। দেশে বিভিন্ন জাতের লেবু থাকলেও এখানে সাধারণত কাগজী, বাতাবি, পাতি ও এলাচি লেবুর আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে কাগজী ও বাতাবি লেবুর চাষই বেশি হয়।

জৈষ্ঠপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল মোকাররম বলেন, এসব পাহাড়ি ভূমি লেবু চাষের জন্য উপযোগী জায়গা। এখানকার চাষিদের যদি উপজেলা কৃষি বিভাগ প্রযুক্তিগত ভাবে প্রশিক্ষণসহ নানাভাবে সহায়তা করলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ফিরে আসবে আর্থিক সচ্ছলতা।

এ ব্যাপারে আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল দে মনে করেন, এখানে বন বিভাগের হাজার হাজার হেক্টর ভূমি পরিত্যক্ত ও অবৈধভাবে দখলে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। এসব ভূমি উদ্ধার করে সরকারিভাবে যদি লেবু চাষের আওতায় আনা যায় তাহলে এসব ভূমিতে লেবু চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণ লেবু বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে।

জে-আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *