সুস্থ থাকার পাশাপাশি নীরোগ থাকার জন্য শরীরচর্চার কোনো বিকল্প নেই। অনেকেই শরীর চর্চায় কাঁধ, বুক আর হাতের পেশিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। সে অনুযায়ী পায়ের পেশিকে তেমন গুরুত্ব দেন না। এই ভুলের কারণে ধীরে ধীরে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছেন আপনি, তা কি আপনি জানেন?
শরীরের বিভিন্ন অংশের মধ্যে যেকেনো একটি অঙ্গকে বেশি প্রাধান্য দেয়ার কারণে অসম দৈহিক গড়ন তৈরি হয়। যা কারোরই কাম্য নয়।
আমাদের উচ্চতা কিন্তু নির্ভর করে এই পায়ের ওপরই। কোনো কারণে পা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা দুর্ঘটনায় পা হারালে মানুষের উচ্চতা তখন নিমিষেই অনেকটা কমে যায়। হাটা চলার ক্ষমতাও হারাতে হতে পারে পায়ের নানা জটিলতায়।
তাই শরীরচর্চায় পায়ের ব্যায়ামকে গুরুত্ব দিন। পাশাপাশি কিছু বিশেষ নিয়ম ও ব্যায়াম শরীরচর্চায় যোগ করুন। যেমন-
১. প্রথমেই যেটি করবেন সেটি হলো শরীরের দৈর্ঘ্য ওজন ও বিএমআই অনুযায়ী পায়ের মাসল কেমন হওয়া উচিত তা একজন দক্ষ চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করা।
২. আপনার কাজের ধরনকে এখানে প্রাধান্য দিতে হবে। সে অনুযায়ী একজন দক্ষ ডয়েটেশিয়ানের কাছ থেকে একটি সঠিক ডায়েট লিস্টও তৈরি করে নিন।
৩. যারা প্রথম শরীরচর্চা করতে শুরু করবেন তারা প্রথমদিকে হালকা ব্যায়ামগুলোকে বেছে নিতে পারেন।
৪. হালকা ব্যায়ামে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার পর ভারি ব্যায়ামগুলো অনুশীলন করতে পারেন।
প্রয়োজনীয় ব্যায়াম
লেগ রেজ: মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে দুই হাতের তালু মেঝের ওপর রাখুন। এবার বাঁ-পা ধীরে ধীরে উপরে তুলুন। মাটি থেকে অন্তত ৪৫ ডিগ্রি কোণে পা রাখতে চেষ্টা করতে হবে। এ অবস্থায় পাঁচ সেকেন্ড পা তুলে রাখুন এবং ধীরে ধীরে নামিয়ে নিন। এই একই পদ্ধতিতে ডান পা অনুশীলন করতে হবে। শুরুর দিকে দুই পায়ে চারবার করে এই লেগ রেজ ব্যায়াম করতে পারেন। এরপর দশবার পর্যন্ত বাড়াতে পারেন লেগ রেজের সেট।
লায়িং হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ: এই ব্যায়াম অনুশীলনেও প্রথমে মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে বাঁ-পা উপরে তুলুন। তবে প্রথম ব্যায়ামের মতো ৪৫ ডিগ্রি পজিশনে নয়। এ ক্ষেত্রে মাটির সঙ্গে পা ৯০ ডিগ্রি কোণে থাকবে। দুই হাত বাঁ-ঊরুর নিচে রেখে ভারসাম্য বজায় রাখুন। এবার বাঁ-হাঁটু আস্তে আস্তে বুকের কাছে আনার চেষ্টা করুন। ৩০ সেকেন্ড অনুশীলন করে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। দুই পায়ে অনুশীলনে ৩০-৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেন পা।
হাফ স্কোয়াট: এই ব্যায়াম অনুশীলন করতে আপনাকে মেঝেতে শুয়ে নয়; বরং মেঝের ওপর দাঁড়িয়ে করতে হবে। প্রথমে হাত দুটি সামনের দিকে তুলুন। এবার বসার চেষ্টা করুন। তবে পুরোপুরি নয়। অর্ধেক বসার ভঙ্গি পর্যন্ত রেখেই উঠে পড়ুন। এভাবে অন্তত দশবার অনুশীলন করতে পারেন।
লেগ এক্সটেনশন এবং হ্যামস্ট্রিং কার্ল: মেশিনের সাহায্যে এই দু’টি বিপরীতমুখী এক্সারসাইজ় করা হয়ে থাকে। সিটে বসে লোয়ার লেগের উপরে বা নীচে ওয়েটেড প্যাড বসিয়ে তা তুলে বা নামিয়ে এই ব্যায়াম করা হয়। আপার লেগের কোয়াড্রিসেপসের স্ট্রেংথ বাড়াতে এই ব্যায়াম বিশেষভাবে কার্যকর।
এন-কে
Leave a Reply